হবিগঞ্জে কাবিখার কাজ না করেই অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় মামলা

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার করাব ইউনিয়নের পিআইও সেতু থেকে আগাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কটি সংস্কার দেখিয়ে কাবিখার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি তোলাছবি: প্রথম আলো

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির কাজ না করে টাকা উত্তোলন করে নেওয়ার ঘটনায় জেলা আদালতে মামলা হয়েছে। ইকবাল মিয়া নামের স্থানীয় একজন বাসিন্দা মামলাটি করেন। মামলায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও দুই ইউপি চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।

হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ মো. হাসানুল ইসলাম অভিযোগ আমলে নিয়ে দুদককে ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।

গতকাল শনিবার প্রথম আলোয় ‘হবিগঞ্জের লাখাইতে কাবিখার কাজ না করেই টাকা খাওয়া শেষ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি করেন ইকবাল মিয়া।

আরও পড়ুন

মামলার অভিযোগে বলা হয়, হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিশেষ বরাদ্দ হিসেবে ৫৯৪ টন চাল এসেছিল। এর ভিত্তিতে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে মুড়িয়াউক, বামৈ, বুল্লা ও করাব ইউনিয়নে ৯টি প্রকল্প নেয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি। কাগজে-কলমে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। বিনিময়ে বরাদ্দ বাবদ প্রায় ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে প্রকল্পের কোনো কাজ না করেই।

মামলায় আরও বলা হয়, উপজেলার করাব ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিমুল বাড়ি পিআইও ব্রিজ থেকে আগাপুর বিদ্যালয় পর্যন্ত এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিমুল বাড়ি পিআইও ব্রিজ থেকে আগাপুর বিদ্যালয় পর্যন্ত দুটি প্রকল্পে ১৩৫ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব চালের বাজারমূল্য ৫৪ লাখ টাকা। এই দুই প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি করাব ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস।

পাশাপাশি একই উপজেলার বুল্লা ইউনিয়নের বলাকান্দি গ্রামের মাঠের কোনা থেকে চন্দ্রিডোবা পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ এবং গোপালপুর বালাকান্দি পাকা রাস্তার কোনা থেকে গোয়াকারা দক্ষিণ গ্রামের ইলিয়াছ মিযার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার জন্য ১৪০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়, যাঁর বাজারমূল্য ৫৬ লাখ টাকা। ইউপি চেয়ারম্যান খোকন চন্দ্র গোপ প্রকল্প দুটির সভাপতি।

অভিযোগে বলা হয়, যেসব রাস্তা দেখানো হয়, সেটিও গ্রামের অনেক পুরোনো। সরেজমিন রাস্তা সংস্কারের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। গ্রামবাসীও রাস্তায় কোনো কাজের কথা জানেন না। উল্লেখিত দুই ইউপি চেয়ারম্যান ও সেই সময়কার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আলী নূর এ তিনজন প্রকল্পের কোনো কাজ না করে নিজেরা মাস্টাররোল পূরণ করে এবং শ্রমিকের স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতি করে সব অর্থ আত্মাসাৎ করেছেন।

মামলার বাদী ইকবাল মিয়া বলেন, শনিবার প্রথম আলোতে ‘হবিগঞ্জের লাখাইতে কাবিখার কাজ না করেই টাকা খাওয়া শেষ’ শিরোনামে প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মামলাটি করেছেন। প্রকল্প কর্মকর্তাসহ দুই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাটি করা হয়েছে। এর আগে একই অনিয়মে বামৈ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন বলে জানান ইকবাল। ওই মামলাও দুদক তদন্ত করছে।