রাজশাহীতে স্ত্রীকে হত্যা করে ভারতে পালানোর চেষ্টা, র‌্যাবের হাতে তরুণ আটক

স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে র‍্যাবের হাতে আটক রুবেল হোসেনছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে রুবেল হোসেন (২৮) নামের এক তরুণকে আটক করেছে র‍্যাব। গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে রাজশাহী শহরের উপকণ্ঠ মাসকাটাদিঘি এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। রুবেল হোসেন সেখান থেকে ভারতে পালানোর পরিকল্পনা করছিলেন বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

আজ মঙ্গলবার সকালে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানান র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস।

রুবেল হোসেন রাজশাহীর বাগমারার গনিপুর ইউনিয়নের বাগমারা পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল ভোরে নিজ বাড়িতে খুন হন রুবেল হোসেনের স্ত্রী ঝর্না খাতুন (২৪)। তাঁকে শাবল দিয়ে খুঁচিয়ে ও গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যার পর রুবেল পালিয়ে যান বলে অভিযোগ স্বজনদের। ঝর্না খাতুন উপজেলার বুজরুকৌড় গ্রামের আলিমুদ্দিনের মেয়ে। ছয় বছর আগে রুবেলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। রুবেল পেশায় নির্মাণশ্রমিক।

র‍্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্ত্রী ঝর্না খাতুনকে হত্যার পর রুবেল হোসেন পালিয়ে উপজেলার মোহনগঞ্জ এলাকায় পরিচিত একজনের বাড়িতে যান। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর রাজশাহী শহরে যান। সেখানে তাঁর এক আত্মীয়ের পরামর্শে মহানগরের মাসকাটাদিঘি এলাকায় অবস্থান নেন। তারপর সেখান থেকে পাশের দেশ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন রুবেল হোসেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাবের একটি দল সেখানে অভিযান চালিয়ে গতকাল রাত ১১টার দিকে তাঁকে আটক করে।

আরও পড়ুন

র‍্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল হোসেন জানিয়েছেন, তিনি একজন মাদকাসক্ত। সংসার চালানোর জন্য বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) থেকে ঋণ নিয়েছেন। এসব নিয়ে মানসিকভাবে অশান্তিতে ছিলেন। পারিবারিক বিবাদও লেগেই থাকত। কয়েক দিন আগে স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। কয়েক দিন পর তিনি শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ক্ষমা চেয়ে আবারও স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসেন। এসবের জের ধরে গতকাল ভোরে স্ত্রীকে হত্যা করেন। এর আগে পাশের কক্ষে থাকা মা ও বোনের ঘরে শিকল দিয়ে আটকিয়ে রাখেন, যাতে তাঁরা বের না হতে পারেন। হত্যার পর দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তিনি।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঝর্নার ভাই বাদী হয়ে রুবেলকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে বাগমারা থানায় একটি মামলা করেন। আসামি রুবেলকে আটকের খবর পেয়েছেন, তবে র‍্যাব এখনো হস্তান্তর করেনি। হস্তান্তর করা হলে তাঁকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।