কারফিউ শিথিল, গোপালগঞ্জে স্বস্তি ফিরছে
গোপালগঞ্জে তিন দিনের কারফিউর পর জনজীবনে ধীরে ধীরে স্বস্তি ফিরছে। আজ শনিবার সকাল ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান। এতে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘর থেকে বের হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। খুলতে শুরু করেছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও।
কারফিউ শিথিল হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ সকালে কাজে বের হয়েছেন। তিন দিন আয়-রোজগার বন্ধ থাকায় পরিবারে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল বলে জানান তাঁরা। কাঁচামাল ও ফল ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। আজ সকালেই অনেকে দোকান খুলে বসেছেন।
সকাল সাড়ে নয়টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন বাজার ও সড়ক ঘুরে দেখা যায়, দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। চায়ের দোকানে জমতে শুরু করেছে আড্ডাও। শহরের পাচুড়িয়া এলাকার রিকশাচালক মহিবুল বলেন, ‘আমি রিকশা চালিয়ে সংসার চালাই। তিন দিনে সব মিলিয়ে ১০০ টাকা আয় করেছি। ধার করে চাল কিনতে হয়েছে। আজ বের হয়েছি ভালো আয়ের আশায়।’ ডিসি রোডের ফল বিক্রেতা আরিফ মোল্লা বলেন, ‘গ্যাঞ্জামের কারণে কারফিউতে দোকান খুলতে পারিনি। আজ নয়টায় দোকান খুলে বসে আছি।’
সকাল নয়টার দিকে কাঁচাবাজারে এসেছিলেন নবীনবাগ এলাকার তিন নারী। চুমকি নামে তাঁদের একজন বলেন, ‘বাসায় কোনো বাজার ছিল না, তাই বাজার করতে এসেছি। গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, গ্রেপ্তারের ভয়ে পুরুষদের বাজারে আসতে দিইনি, নিজেই এসেছি।’
জেলার তিনটি থানায় পুলিশের করা তিনটি মামলায় মোট ২ হাজার ৬০৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৩০৪ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এসব মামলার কারণে এখনো গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন অনেকে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে গোপালগঞ্জে সংঘর্ষ, হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার পাঁচটি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সবাইকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।