যশোরে মুঠোফোন ছিনিয়ে নিতে নৈশপ্রহরীর গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা

যশোর জেলার মানচিত্র

যশোরের অভয়নগরে নৈশপ্রহরী মিন্টু তরফদারের (৬০) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দুই তরুণ গ্রেপ্তার হয়েছেন। সোমবার সকালে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাজীপুর নিম্নস্মরণপাড়া থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

ওই দুই তরুণ হলেন রায়হান বিশ্বাস (১৯) ও আশিকুর রহমান (১৯)। রায়হান নড়াইল সদর উপজেলার রুখালী গ্রামের বাসিন্দা। আশিকুরের বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাউনডাঙ্গা গ্রামে। গ্রেপ্তারের পর আজ সোমবার বিকেলে আদালতে হাজির করা হলে তাঁরা মিন্টু তরফদারকে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পিবিআই।

পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বলেন, নিহত মিন্টু তরফদার অভয়নগর উপজেলার দুর্গাপুর এলাকার সরকার গ্রুপের ঘাটের নৈশপ্রহরী ছিলেন। গত শনিবার সকাল ৯টার দিকে অফিসের একটি কক্ষ থেকে তাঁর মরদেহটি উদ্ধার হয়। মিন্টুর মুখমণ্ডল রক্তাক্ত ও গলায় হলুদ রঙের একটি গামছা প্যাঁচানো ছিল। এ ঘটনায় মিন্টুর স্ত্রী জুলেখা বেগম রোববার অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।

আরও পড়ুন

রেশমা শারমিন বলেন, পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই এ ঘটনায় ছায়া তদন্ত শুরু করে। নিহতের মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে রায়হান বিশ্বাস ও আশিকুর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। তাঁরা মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর নিম্নস্মরণপাড়ায় একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। এরপর অভিযান চালিয়ে সোমবার সকালে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে মিন্টু তরফদারের মুঠোফোন দুটি উদ্ধার করা করা হয়। বিকেলে তাঁদের আদালতে নেওয়া হয়। তাঁরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বিচারক জবানবন্দি গ্রহণ শেষে দুজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জবানবন্দির বরাত দিয়ে রেশমা শারমিন বলেন, গত শুক্রবার রায়হান ও আশিকুর চাকরির আশায় সরকার গ্রুপের কয়লার ডিপোতে যান। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় তাঁদের চাকরি হয়নি। ফেরার পথে তাঁরা নৈশপ্রহরী মিন্টু তরফদারের হাতে দুটি মুঠোফোন দেখতে পান। তাঁরা মুঠোফোন দুটি চুরি করবে বলে পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই দিন রাতে তাঁরা মিন্টু তরফদারের সঙ্গে দেখা করে কার্যালয় কক্ষে থাকার প্রস্তাব দেন। প্রথমে রাজি না হলেও পরে মিন্টু তাঁদের থাকতে দিতে রাজি হন। রাত নয়টার দিকে তাঁরা মিন্টু তরফদাদের সঙ্গে অফিস কক্ষে বসে গল্প করেন। গল্পের একপর্যায়ে তাঁরা মিন্টু তরফদাদের গলায় গামছা প্যাঁচিয়ে গামছার দুই দিক থেকে দুইজনে টেনে ধরে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর তাঁরা মিন্টু তরফদারের মুঠোফোন দুটি নিয়ে পালিয়ে যান।