বাঘের থাবায় আহত হওয়ার ২১ দিন পর মারা গেলেন অনুকূল

লাশ
প্রতীকী ছবি

সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি বাঘের আক্রমণে‌ আহত হয়েছিলেন অনুকূল গাইন (৩৮) নামের এক যুবক। দীর্ঘ ২১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেছেন এই জেলে। গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

অনুকূল গাইন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার আমুরবনিয়া গ্রামের মৃত মুকুন্দ গাইনের ছেলে। অনুকূল গাইনের চাচাতো ভাই নিধির গাইন ও সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারা স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাজাহান মোক্তাদির প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন

অনুকূলের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনুকূলের বাবা মুকুন্দ গাইন প্রায় ১৫ বছর আগে মারা যান। এরপর থেকে সুন্দরবনে মাছ ধরে চলছিল মা আর এক ছেলের সংসার। অনুকূল বিয়ে করেননি। তাঁর মা অসুস্থ হওয়ায় মাছ ধরার পাশাপাশি রান্নাবান্নাসহ সব কাজ করতে হতো অনুকূলকে। বাঘের আক্রমণে ছেলে আহত হওয়ার খবর শোনার পর থেকেই অনুকূলের মা অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন।

বন বিভাগ জানায়, গত ২৭ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সুন্দরবনের জিউধারা স্টেশনের সুধীরের সিলা এলাকায় মাছ ধরার সময় বাঘের আক্রমণের শিকার হন অনুকূল গাইন। এ সময় অনুকূলের চিৎকার শুনে তাঁর সঙ্গে আরেক জেলে মাহাবুব শেখ ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে বাঘটি অনুকূলকে ছেড়ে দিয়ে বনের ভেতর চলে যায়। পরে মাহাবুবের চিৎকার শুনে বন–সংলগ্ন আমরবুনিয়া গ্রামের ১৪-১৫ জন লোক ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে উদ্ধার করে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। বাঘের আক্রমণে তাঁর মেরুদণ্ড, পাঁজরসহ পেটে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছিল।

অনুকূলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই দিন রাতেই অনুকূলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

সুন্দরবনের জিউধারা স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাজাহান মোক্তাদির বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে অনুকূল মারা গেছেন। তাঁর লাশ গ্রামে নিয়ে আসার প্রস্তুতি চলছে। বাড়িতে পৌঁছানোর পর তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে।