যশোরে বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশের লাঠিপেটা, আটক ২

পদযাত্রা নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নওয়াপাড়া মেহগনি মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়
ছবি: প্রথম আলো

যশোরে সদর উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়ন ও ফতেপুর ইউনিয়নে বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশের লাঠিপেটায় কর্মসূচি পণ্ড হয়ে গেছে। আজ শনিবার দুপুরে এসব ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পদযাত্রা থেকে বিএনপির দুই কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে বলে দাবি করছেন বিএনপির স্থানীয় নেতারা।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, আজ বেলা তিনটার দিকে নওয়াপাড়া ইউনিয়নের বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে জড়ো হন। কিছুক্ষণের মধ্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য তরিকুল ইসলামের স্ত্রী যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগম সেখানে পৌঁছান। পরে বাহাদুরপুর এলাকা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পদযাত্রা বের করেন। পদযাত্রা নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নওয়াপাড়া মেহগনি মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে ব্যানার কেড়ে নেয়। পরে ব্যানার ছাড়াই পদযাত্রা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন নেতা-কর্মীরা। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সামনে পৌঁছালে পুলিশ লাঠিপেটা করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় নেতা-কর্মীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় সেখান থেকে এক কর্মীকে আটক করে পুলিশ।

পদযাত্রাটি শহরের শেখহাটি হাইকোর্ট মোড়ে গিয়ে সংক্ষিপ্ত পথসভার মধ্য দিয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে পুলিশি বাধার মুখে পদযাত্রা পণ্ড হয়ে যায়। যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগম বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ পদযাত্রাও সরকার সহ্য করতে পারছে না। আমরা পদযাত্রা থেকে স্লোগানও দিইনি। শুধু ১০ দফা দাবিসংবলিত প্রচারপত্র পথচারী ও দোকানে দোকানে বিলি করা হয়েছে। এতেই পুলিশ পেছন থেকে অতর্কিত আমাদের লাঠিপেটা করে পদযাত্রা পণ্ড করে দেয়। এ সময় একজন কর্মীকে আটক করা হয়েছে।’ তবে তাৎক্ষণিকভাবে আটক ওই কর্মীর পরিচয় জানাতে পারেনি বিএনপি।

এদিকে একই সময়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ছেলে খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলামের নেতৃত্বে ফতেপুর ইউনিয়নে পদযাত্রা বের হয়। পদযাত্রাটি যশোর-নড়াইল সড়কের দায়তলা এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ প্রথমে তাঁদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ ও নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর একপর্যায়ে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় নেতা-কর্মীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে পাল্টা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় যুবদলের এক নেতাকে পুলিশ আটক করে বলে দাবি করছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

পুলিশি বাধায় নওয়াপাড়া ইউনিয়ন ও ফতেপুর ইউনিয়নে বিএনপির কর্মসূচি পণ্ড হয়ে গেছে
ছবি: প্রথম আলো

আটকের বিষয়ে জানতে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) জুয়েল ইমরান ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁরা কেউ সাড়া দেননি।

এদিকে কর্মসূচির আগে গতকাল শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিএনপির ১২ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিএনপি নেতাদের দাবি, বিএনপির কর্মসূচি পণ্ড করার জন্য পুলিশ নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় করছে।

আরও পড়ুন

এর আগে আজ সকালে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ আগের বিভিন্ন মামলা আছে। দলীয় কোনো কর্মসূচি পণ্ড করতে নয়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।