সাভারে বন্ধ কারখানাগুলো খুলেছে, কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকেরা

সাভারের আশুলিয়ার বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ায় কাজে যোগ দিচ্ছেন শ্রমিকেরা। আজ সকাল পৌনে আটটার দিকে জামগড়া এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনায় সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের বন্ধ কারখানাগুলো আজ মঙ্গলবার খুলেছে। আজ সকাল থেকে এসব কারখানায় শ্রমিকেরা কাজ শুরু করেছেন। তবে শ্রমিকেরা কাজে যোগ না দেওয়ায় একটি কারখানা এখনো বন্ধ আছে।

কারখানা খোলার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম। তিনি বলেন, আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর আওতায় সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে ১ হাজার ৭৯২টি কারখানা আছে। এগুলোর মধ্যে আজ একটিমাত্র কারখানা ছাড়া বাকিগুলোতে কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে কিছু কারখানায় আংশিক কাজ চলছে। শুধু শ্রমিকেরা কাজ না করায় নাবা নিট কারখানাটি এখনো বন্ধ আছে। কয়েক দিন ধরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

আরও পড়ুন

আজ সকালে আশুলিয়ার জামগড়া, বেরন, নরসিংহপুর, নিশ্চিন্তপুর, জিরাবো এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ কারখানার সামনে শ্রমিকেরা জড়ো হয়েছেন। কারখানার ফটকে আজ থেকে খোলার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কারখানার সামনে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাখা হয়েছে জলকামান।
একাধিক পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল সোমবার রাতে সুপারভাইজাররা তাঁদের মুঠোফোনে আজ থেকে কারখানা খোলা এবং কাজ যোগদানের জন্য জানিয়েছেন।

এনভয় কমপ্লেক্সের সামনের ফটকে দাঁড়িয়ে থাকা এক অপারেটর প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতে সুপারভাইজার আমাদের কাজে আসতে বলছে, তাই আসছি।’
পোশাকশ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য গত এপ্রিলে নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে সরকার। গত ২২ অক্টোবর বোর্ডের সভায় শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব দেন। আর মালিকপক্ষ প্রায় অর্ধেক বা ১০ হাজার ৪০০ টাকার মজুরি প্রস্তাব দেয়। মালিকপক্ষের এই মজুরি প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকেরা পরদিন বিক্ষোভে নামেন।

আরও পড়ুন

প্রথমে গাজীপুরে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু হলেও পরে তা আশুলিয়া ও মিরপুরে ছড়ায়। এই আন্দোলনে গাজীপুরের চার পোশাকশ্রমিক নিহত হন। গত মঙ্গলবার পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা চূড়ান্ত করা হয়। তবে শ্রমিকেরা আরও বেশি মজুরির দাবি করছিলেন। তাঁরা বলেছেন, নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে নির্ধারিত মজুরি দিয়ে তাঁদের চলা কঠিন।

বাড়তি মজুরির দাবিতে বিক্ষোভ চলতে থাকলে গত বুধবার থেকে শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় ‘কাজ নেই, মজুরি নেই ভিত্তিতে’ কারখানা বন্ধ করা শুরু করেন মালিকেরা।