টাঙ্গাইল-আরিচা মহাসড়ক সম্প্রসারণের জন্য সহস্রাধিক গাছ কাটা হচ্ছে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
শহীদ মাহমুদ: আমরা উন্নয়নের বিরোধী নই। যোগাযোগব্যবস্থাসহ সব ক্ষেত্রে আমরা উন্নয়ন চাই। তবে উন্নয়ন পরিকল্পনা করার সময় সড়কের পাশের গাছগুলোর কথা চিন্তা করা উচিত। টাঙ্গাইল-আরিচা মহাসড়ক সম্প্রসারণ পরিকল্পনা নেওয়ার সময়ও সড়কের পাশের গাছগুলোর কথা চিন্তা করা উচিত ছিল। গাছগুলোর কথা চিন্তা করে সড়ক সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করলে এগুলো রক্ষা পেত।
সড়কের দুই পাশের গাছগুলো কাটা হলে পরিবেশের ওপর কী ধরনের প্রভাপ পড়বে বলে আপনি মনে করেন?
শহীদ মাহমুদ: ওই সড়কের দুই পাশে অনেক পুরোনো গাছ আছে। এর মধ্যে শতাধিক বছরের পুরোনো বিভিন্ন ফলদ ও বনজ গাছও আছে। এসব গাছ পথচারীদের শীতল ছায়া দেয়। গাছগুলো প্রাণবৈচিত্র্যের আঁধার। এখানে নানা ধরনের পাখি বাস করে। একযোগে সব গাছ কেটে ফেললে পাখিগুলো আশ্রয় হারাবে। এ অঞ্চলের অনেক পাখি হয়তো হারিয়ে যাবে। এভাবে গাছ কাটার ফলে প্রাণবৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
সড়কটি আপনি নিজে দেখেছেন? গাছগুলো না কেটে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যেত?
শহীদ মাহমুদ: আমি সড়কটি একাধিকবার পরিদর্শন করেছি। তখন আমার মনে হয়েছে, শুধু সড়ক সম্প্রসারণের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা হয়েছে। পরিকল্পনা করার সময় গাছের কথা চিন্তা করা হয়নি। সড়কটি এক দিকে প্রশস্ত করা হলে শুধু একদিকের গাছ কাটা পড়ত। এতে অন্তত অর্ধেক গাছ রক্ষা পেত। অনেক পুরোনো গাছ আছে যে জায়গায়, সেখানে সড়কের নকশা একটু পরিবর্তন করলেই গাছগুলো রক্ষা করা যেত।
সড়ক বিভাগ বলছে তারা যে পরিমাণ গাছ কাটছে, সড়ক নির্মাণের পর এর চেয়ে বেশি গাছ লাগাবে। এতে গাছ কাটার ক্ষতি পূরণ হবে না?
শহীদ মাহমুদ: সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সড়ক নির্মাণের পর নতুন করে আরও বেশি গাছ লাগানো হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এখন গাছ কাটা চলছে। তারপর সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শেষ হতে বছরেরও বেশি সময় লাগবে। তারপর চারা লাগানোর পর গাছ বড় হতে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে। এ সময়ের মধ্যে জীববৈচিত্র্যের যে ক্ষতি হবে, তা পূরণ হওয়ার নয়।
গাছগুলো রাখার জন্য আপনারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন?
শহীদ মাহমুদ: গাছ কাটা বন্ধের দাবি জানিয়ে আমরা সড়ক ও জনপথ বিভাগে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেব। গাছ কাটার বিরুদ্ধে জনমত গঠনের জন্য গাছগুলোতে ব্যানার–ফেস্টুন টাঙানো হবে। এ ছাড়া মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হবে। এসব কর্মসূচিতে যেকোনো উন্নয়ন পরিকল্পনায় পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি যে গুরুত্ব দিয়ে ভাবা দরকার, তা জানাব।