গাজীপুর মহানগরের আদাবৈ পেয়ারাবাগান এলাকায় ঝুট ব্যবসা দখলের জন্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে একটি পক্ষ। শুক্রবার দুপুরের ছবি
ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন আদাবৈ এলাকায় পোশাক তৈরির কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে আহত এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার দুপুরে আতিকুর রহমান (৩২) নামের ওই যুবকের মৃত্যু হয়।

আতিকুর গাজীপুর মহানগরীর ছোট দেওড়া এলাকার বাসিন্দা মো. সুরুজ মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে ঘটনায় জড়িত অভিযোগে আরও ৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের আদাবৈ এলাকায় ১৬ জুন দুপুরে ঝুট ব্যবসার দখল নিতে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়ার ঘটনা ঘটে। সেখানে নেক্সট এক্সপার্ট জোন লিমিটেড নামের কারখানার সামনে পিকআপ গাড়িতে ঝুট মালামাল তোলার কাজ করছিলেন আতিকুর রহমান। ওই সময় স্থানীয় মাসুম মিয়া, মো. রায়হানসহ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল আতিকুরকে ঝুট মালামাল তুলতে বাধা দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আতিকুর কোমরে গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আরও পড়ুন

গাজীপুরে ঝুট ব্যবসার দখল নিয়ে অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৯

ওই কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুট ব্যবসা করে আসছেন স্থানীয় মোস্তফা কামাল নামের আওয়ামী লীগের এক নেতা। তাঁর ছেলে ইয়াছিন আরাফাত অভিযোগ করেন, স্থানীয় কাজী শাহিন ওরফে ব্ল্যাক শাহিন ও বিপ্লব ব্যবসাটির দখল নিতে চাচ্ছিলেন। তাঁদের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ১৬ জন যুবক ১৬ জুন সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বাড়ির আশপাশে ওত পেতেছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা চায়নিজ কুড়াল, রামদাসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান।

ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ৯ জন যুবক হাতে চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, দেশি অস্ত্রসহ দৌড়ে যাচ্ছেন ঝুট ব্যবসায়ী মোস্তফার বাড়ির দিকে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ওই বাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে মারছিলেন। এ সময় হামলাকারী যুবকেরা বলছিলেন, ‘তোদেরকে মেরে ফেলব।’ বাড়ির সামনে গুলির একটি খোসাও পড়ে থাকতে দেখা যায় ভিডিওতে।

সদর থানা সূত্রে জানা যায়, সে দিনের ঘটনার পর আহত শাহাদত হোসেনের মা কারিমুন বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে। আতিকুরের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্ত্রী খাদিজা আক্তার বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন। ওই মামলায় গতকাল রাতে আদাবৈ এলাকা থেকে মো. ফয়সাল হোসেন (২৩) নামের আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম জানান, এর আগে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল রাতে ফয়সালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত।

আরও পড়ুন

গাজীপুরে ঝুট ব্যবসার দখল নিয়ে অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় মামলা ও গ্রেপ্তার নেই