গাজীপুরে ঝুট ব্যবসার দখল নিয়ে অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় মামলা ও গ্রেপ্তার নেই

গাজীপুর মহানগরের আদাবৈ পেয়ারাবাগান এলাকায় ঝুট ব্যবসা দখলের জন্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে একটি পক্ষ। গতকাল শুক্রবার দুপুরের ছবি
ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর মহানগরীর আদাবৈ এলাকায় তৈরি পোশাকের একটি কারখানায় ঝুট ব্যবসার দখল নিতে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। এ ছাড়া আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। তবে পুলিশ বলছে, অস্ত্রধারী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর আদাবৈ পেয়ারাবাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আদাবৈ এলাকার বাসিন্দা ঝুট ব্যবসায়ী মোস্তফা কামালের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৬০) ও ইজ্জত আলীর ছেলে শাহাদত হোসেন (৩৫) আহত হন।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরীর আদাবৈ পেয়ারাবাগান এলাকায় নেক্সট এক্সপোর্ট জোন লিমিটেড নামের পোশাক তৈরির একটি কারখানা রয়েছে। ওই কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুট ব্যবসা করে আসছেন মোস্তফা কামাল নামের আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা। গতকাল দুপুরে ওই কারখানার ঝুট মালামাল বের করতে গেলে একদল যুবক তাঁদের বাধা দেন। ঝুট ব্যবসা দখলে নিতে তাঁরা প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন। আতঙ্ক ছড়াতে পরপর কয়েকটি গুলি ছোড়েন। ওই ঘটনায় আজ সকাল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। পুলিশও অস্ত্রধারী কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

আরও পড়ুন

এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ৯ জন যুবক হাতে চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, দেশীয় অস্ত্রসহ দৌড়ে যাচ্ছেন ঝুট ব্যবসায়ী মোস্তফার বাড়ির দিকে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ওই বাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে মারছিলেন। এ সময় হামলাকারীরা বলছিলেন, ‘তোদেরকে মেরে ফেলব।’ পরে বাড়ির ফটকের সামনে মোস্তফার স্ত্রী ফাতেমা ও শাহাদতকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। বাড়ির সামনে গুলির একটি খোসাও পড়ে থাকতে দেখা যায় ভিডিওতে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশায় করে ৮ থেকে ১০ জন যুবকের একটি দল এসে মোস্তফার বাড়িতে আক্রমণ চালায়। এ সময় শাহাদতকে সামনে পেয়ে মারধর করা হয়। পরে তারা এসে বাড়িঘরেও ভাঙচুর করে। তবে এ সময় স্থানীয় রাহাত ও রফিকের হাতে পিস্তল দেখা যায়। সেটি দিয়ে তাঁরা কয়েকটি গুলি ছোড়েন। শাহাদতকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

ঝুট ব্যবসায়ী মোস্তফা কামালের ছেলে ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পাশেই নেক্সট এক্সপোর্ট জোন লিমিটেড নামের কারখানা। কারখানা নির্মাণ করার সময় আমাদের সঙ্গে চুক্তি হয়, কারখানার ঝুট ব্যবসা আমার বাবা করবেন। সেই থেকেই ব্যবসাটি আমরা করে যাচ্ছি।’

স্থানীয় কাজী শাহিন ওরফে ব্ল্যাক শাহিন ও বিপ্লব ব্যবসাটির দখল নিতে যাচ্ছিলেন উল্লেখ করে ইয়াছিন বলেন, ‘শাহিন ও বিপ্লবের নেতৃত্বে ১৫-১৬ জন যুবক শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত আমাদের বাড়ির আশপাশে ওত পেতে থাকে। দুপুর ১২টার দিকে তারা আমাদের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে তারা চায়নিজ কুড়াল, রামদাসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।’

এ বিষয়ে গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম বলেন, তাঁদের অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।