অপরাধ করেও নিষ্কৃতি পাওয়ার ঘটনায় ম্রো গ্রামে আবার হামলা হয়েছে: সিএইচটি কমিশন
বান্দরবানের লামার ম্রো গ্রামে হামলায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন (সিএইচটি কমিশন)। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানানোর পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে সংস্থাটি। তারা স্থানীয় পাহাড়িদের মানবাধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
লামা উপজেলার সরইয়ে গত রোববার রাতে রেংয়েন ম্রোপাড়ায় হামলা চালিয়ে লুটপাট, সাতটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শীতের রাতে হামলার সময় পাড়ার নারী-পুরুষ ও শিশুরা পালিয়ে রক্ষা পেলেও ঘরবাড়ি থেকে কাপড়চোপড় ও মালামাল হামলাকারীরা নিয়ে গেছে। পাড়াবাসীর অভিযোগ, লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড কোম্পানি তাঁদের উচ্ছেদ করে জমি দখলের জন্য ট্রাকভর্তি লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে এসে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে।
সিএইচটি কমিশনের বিবৃতিতে এ ঘটনার জন্য লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে দায়ী করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, প্রভাবশালী লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পাহাড়ি গ্রামটিতে একের পর এক সন্ত্রাস ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটাচ্ছে। তাদের এসব হামলার শিকার হচ্ছেন লাংকম কার্বারিপাড়া, জয়চন্দ্র ত্রিপুরা পাড়া ও রেংয়েন কার্বারিপাড়ার মানুষেরা। এর আগে গত বছরের ৩০ এপ্রিল ও ২৮ সেপ্টেম্বর দুইবার পাহাড়িদের ন্যায়বিচার ও সুরক্ষার দাবিতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কমিশন। আগের হামলাগুলোর দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে সরকার ক্রমাগতভাবে ব্যর্থ হওয়ায় এবারের ঘটনা ঘটেছে।
সিএইচটি কমিশনের বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করে বলা হয়, এবারের হামলায় দোষীদের চিহ্নিত করে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। আর এর মাধ্যমে স্থানীয় পাহাড়িদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। অপরাধ করেও নিষ্কৃতি পাওয়ার বিদ্যমান সংস্কৃতির কারণেই হামলাকারীরা উৎসাহিত হয়েছে। ফলে পাহাড়িরা হামলার শিকার হচ্ছেন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন সিএইচটি কমিশনের তিন কো–চেয়ার সুলতানা কামাল, এলসা স্টামোটোপৌলো, মিরনা কানিংহাম কেইন।