মেয়াদ শেষের আগেই আরিফুল হককে ‘সাবেক মেয়র’ সম্বোধন করে দলীয় ‘পদোন্নতির’ চিঠি

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

সিলেট সিটি করপোরেশনের টানা দুবারের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। চলতি বছর দলীয় নির্দেশনা মেনে সিটি নির্বাচনে অংশ নেননি তিনি। নির্বাচনে অংশ না নিলেও আগামী ৭ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সেই অনুযায়ী বর্তমানেও তিনি মেয়র।

এদিকে দলীয় নির্দেশনা মেনে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় আরিফুল হক চৌধুরীকে ‘পুরস্কৃত’ করেছে বিএনপি। জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ থেকে পদোন্নতি দিয়ে তাঁকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা করা হয়েছে। তিনিসহ দলের আরও কয়েকজন নেতাকে এমন পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়টি গতকাল শনিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

সেই বিজ্ঞপ্তিতে আরিফুল হককে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সম্বোধন করা হলেও বিপত্তি বেধেছে ব্যক্তিগতভাবে দেওয়া চিঠিতে। যদিও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও ব্যক্তিগতভাবে দেওয়া পদোন্নতির চিঠিতে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষর করেছেন।

দলীয়ভাবে দেওয়া চিঠিতে দুই ধরনের সম্বোধনকে কেন্দ্র করে সিলেটের নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বিষয়টিকে ‘ভুল’ হিসেবেই দেখছেন। আবার অনেকে কেন্দ্রীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ এমন চিঠিতে এমন ভুল মেনে নিতে পারছেন না।

আরও পড়ুন

আরিফুল হক চৌধুরীকে দেওয়া চিঠিতে ‘প্রতি আরিফুল হক চৌধুরী, সদস্য জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও সাবেক মেয়র সিলেট সিটি করপোরেশন’ সম্বোধন করে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘প্রিয় সহকর্মী শুভেচ্ছা নেবেন। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে নির্দেশক্রমে আপনাকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য পদে মনোনীত করা হয়েছে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে সুসংগঠিত ও গতিশীল করতে আপনি সর্বদা কর্মতৎপর থাকবেন বলে দল আশা রাখে।’ চিঠির নিচে রহুল কবির রিজভী ও তাঁর পদবি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব, বিএনপি উল্লেখ আছে।

এ ব্যাপারে কথা বলতে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। অন্যদিকে সিলেট বিএনপির কোনো নেতা নাম প্রকাশ করে মন্তব্য করতে চাননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলীয়ভাবে দেওয়া চিঠিতে বিশেষ সতর্ক থাকা প্রয়োজন ছিল বলে কেউ কেউ মন্তব্য করেন।

আরও পড়ুন

গত ২১ জুন সিলেট সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আগে দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছিল বিএনপি। নির্দেশনা অমান্য করে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী একাধিক নেতা-কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আবার অনেক নেতা-কর্মী নির্দেশনা মেনে নির্বাচনে অংশ নেননি। সিটি করপোরেশনের দুবারের নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নিজেও দলীয় নির্দেশনা মেনে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ নির্বাচনে জয়ী হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।