তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন: তিস্তায় নেমে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদ

লালমনিরহাটের তিস্তা রেলসেতুসংলগ্ন নদীতে নেমে কয়েক হাজার মানুষ প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন কর্মসূচি পালন করেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরেছবি: মঈনুল ইসলাম

তিস্তা নদীতে নেমে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানালেন আন্দোলনকারীরা। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’ প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন কর্মসূচির আয়োজন করে। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে লালমনিরহাটের তিস্তা রেলসেতুসংলগ্ন নদীতে নেমে কয়েক হাজার মানুষ এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।

এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ভারত বছরের পর বছর তিস্তা নদীর পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করেছে যার মাশুল দিচ্ছে বাংলাদেশের পাঁচ জেলার অন্তত দুই কোটি মানুষ। শুষ্ক মৌসুমে এসব এলাকার মানুষ ফসল ফলাতে পারে না। আবার বন্যার সময় হঠাৎ করে পানি ছেড়ে দেওয়ায় ব্যাপক এলাকা ভাঙনের শিকার হয়। প্রায় এক ঘণ্টা আন্দোলনকারীরা পানিতে অবস্থান করেন।

প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব (দুলু), সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, জেলা বিএনপির আহবায়ক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।‌

আসাদুল হাবিব বলেন, ‘বহমান তিস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়েছি, কিন্তু পানি নাই। তিস্তা মরুভূমি হয়ে গেছে। গতকাল বিভিন্ন কর্মসূচি ও আজ সকালের পদযাত্রায় আমরা তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দাবি করে যাচ্ছি। এখন আমরা তিস্তার পানিতে নেমে বিশ্ববাসীকে দেখাতে চাই, আসলে তিস্তায় কোন পানি নেই। আমরা তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আন্তর্জাতিক নদী আইন অনুযায়ী পানির ন্যায্য হিস্যা দেওয়া হোক।’

আসাদুল হাবিব আরও বলেন, ‘তিস্তা একসময় এই এলাকার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে। সেখানে মানুষ ছিন্নমূল হয়েছে, ভিক্ষুকে পরিণত হয়েছে। কর্মহীন মানুষের সংখ্যা দিন দিন রংপুরে বেড়েই যাচ্ছে। দুই কোটি মানুষের জীবনরেখা তিস্তা নদী। এই নদীকে রক্ষা না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে সরে যাব না।’

আরও পড়ুন
‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’ আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন কর্মসূচির আয়োজন করে
ছবি: মঈনুল ইসলাম

এর আগে আজ বেলা পৌনে‌ ১১টার দিকে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের তিস্তা সড়কসেতু থেকে গণপদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তিন কিলোমিটার দূরে কাউনিয়া উপজেলায় পদযাত্রাটি পৌঁছায়। পরে সেখান থেকে আবার তিস্তা সেতুর দিকে যায়।

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে গতকাল ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। গতকাল তিস্তা নদীবেষ্টিত পাঁচটি জেলার ১১টি স্থানে একসঙ্গে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি নদীপারের হাজারো বাসিন্দা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। কর্মসূচিতে যোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও।

আজ বিকেল পাঁচটায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তিস্তাপারের ১১টি স্থানে অবস্থান কর্মসূচিতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেবেন। এসব কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, হাফিজ উদ্দিন আহমদসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন