সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী মো. বুলবুল আহমেদ (২২) হত্যায় সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা চিহ্নিত হয়নি। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, খুনিদের চিহ্নিত করতে কাজ চলছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
এদিকে বুলবুল হত্যার প্রতিবাদ ও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে আজ বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করবেন। অন্যদিকে খুনীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও হত্যার বিচার চেয়ে দুপুর ১২টায় ক্যাম্পাসে মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, বুলবুল যখন ছুরিকাহত হন, তখন একজন ছাত্রী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তবে ঘটনার পর থেকে ওই ছাত্রী বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন। ফলে সে সময়ের ঘটনা জানা সম্ভব হচ্ছে না। যেহেতু ওই ছাত্রীই একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী, তাই ছাত্রীটি কিছুটা সুস্থ বোধ করলে তাঁর সঙ্গে আলাপ করে ঘটনার বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে।
গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে গাজী-কালু টিলালাগোয়া ‘নিউজিল্যান্ড’ এলাকায় বুলবুল ছুরিকাহত হন। পরে তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাত পৌনে আটটার দিকে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় রাতেই সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন।
নিহত বুলবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর বাড়ি নরসিংদী সদরের চিনিশপুরম নন্দীপাড়া গ্রামে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের ২১৮ নম্বর কক্ষে থাকতেন। বুলবুলের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা গতকাল রাত সাড়ে ১০টা থেকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন। দিবাগত রাত পৌনে ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেও প্রতিবাদ জানান। পরে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বুলবুল হত্যায় দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বাড়ানোর আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ থেকে সরে আসেন।
সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হুদা খান আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, নিহত বুলবুলের লাশ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আজ ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ওসি মো. নাজমুল হুদা খান আরও বলেন, প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রীর সঙ্গে পুলিশ কথা বলার চেষ্টা করছে, তবে ছাত্রীটি বারবার মুর্ছা যাওয়ায় বিস্তারিত জানা যাচ্ছে না। পুলিশ পুরো বিষয়টি তদন্ত করছে। দ্রুতই খুনিদের শনাক্ত করার পাশাপাশি গ্রেপ্তার করা হবে।