তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র পদে সংসদ সদস্যপত্নীর ‘প্রতিদ্বন্দ্বী নেই’

খন্দকার শায়লা পারভীনছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার উপনির্বাচনে মেয়র পদে এখন পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পাচ্ছেন না খন্দকার শায়লা পারভীন। তিনি রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী ও তাহেরপুর পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলো খন্দকারের মেয়ে।

মেয়র পদে উপনির্বাচনে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত শায়লা পারভীনসহ দুজন মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। অন্যজন হলেন শায়লার ছোট ভাই তানভীর ইসলাম ফেরদৌস। তবে যাচাই–বাছাইয়ে বোনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হলে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন বলে জানিয়েছেন। আজ মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন তাঁরা দুজনই মনোয়নপত্র জমা দেবেন। এ ছাড়া অন্য কারও প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনার কথা শোনা যায়নি।

আগামী ৯ মার্চ তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ও এক কাউন্সিলর পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুসারে আজ মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। যাচাই-বাছাই ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রত্যাহার করা যাবে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্বে) আবদুল মজিদ প্রথম আলোকে বলেন, আজ বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত কেবল দুজন প্রার্থী হতে মনোয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। তাঁরা আজ শেষ দিনে মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন বলে জানিয়েছেন।

সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন। তিনি পদত্যাগ করে এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর ফলে মেয়র পদটি শূন্য হয়।

আরও পড়ুন

বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকায় দলের কেউ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। এ প্রসঙ্গে তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি শামসুর রহমান বলেন, তাঁরা এই সরকারে পাতানো কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না, স্বতন্ত্র হিসেবেও কেউ নির্বাচনে যাবেন না, এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

খন্দকার শায়লা পারভীন এর আগে ২০০৩ সালে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাঁর বাবা আওয়ামী লীগের নেতা ও পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান আলো খন্দকার চরমপন্থীদের হামলায় নিহত হওয়ার পর উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি নির্বাচিত হন।

খন্দকার শায়লা পারভীন বলেন, তিনি ২০০৩ সালে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এবার মেয়রের পদটি শূন্য হওয়ার পর দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও এলাকার লোকজনের চাপ তাঁর ওপর বাড়ছিল। প্রতিদিন তাঁরা বাড়িতে এসে নির্বাচন করার জন্য অনুরোধ করছিলেন। অনেকে বলেছেন, তাঁর বাবার হাতে গড়া পৌরসভার নেতৃত্ব অন্য কারও হাতে না দিতে। তাঁরাই (দলীয়) মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। আগের মতোই লোকজনের পাশে থেকে সেবা, বর্তমান সরকার ও সংসদ সদস্যের সহায়তায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন বলে জানান।

বোনের বিপক্ষে নিজের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে তানভীর ইসলাম ফেরদৌস প্রথম আলোকে জানান, তিনি মূলত বড় বোনের সমর্থনে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। যাচাই–বাছাইয়ে কোনো কারণে বোন বাদ পড়লে তিনি প্রার্থী থাকবেন। বড় বোন টিকে গেলে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন।

পৌরসভার বিভিন্ন পেশার লোকজন ও দলীয় নেতা-কর্মী খন্দকায় শায়লা পারভীনকেই মেয়র হিসেবে চাইছেন বলে দাবি সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শায়লা পারভীনের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলো খন্দকার এই পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি পৌরসভার উন্নয়নে সব ধরনের সহায়তা করবেন।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র বাবুল খান জানান, তাঁরা খন্দকার শায়লা পারভীনকেই চাইছেন। কারণ, পৌরসভা পরিচালনা করার তাঁর যথেষ্ট অভিজ্ঞতাও রয়েছে। এ ছাড়া তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার ও রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য তাঁকেই যোগ্য বলে মনে করছেন বলে জানান।