নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে কারণ দর্শানোর চিঠির জবাব দিলেন শিবলী সাদিক

দিনাজপুর-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শিবলী সাদিক
ছবি: সংগৃহীত

আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির দেওয়া কারণ দর্শানোর চিঠির জবাব দিয়েছেন দিনাজপুর-৬ (বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাট ও হাকিমপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী শিবলী সাদিক।

আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে দিনাজপুর নির্বাচনী এলাকা-১১–এর নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও সহকারী জজ হাসিবুজ্জামানের কাছে লিখিত জবাব দেন তিনি। গত রোববার নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। আজ বিকেলের মধ্যে সেটির জবাব দিতে বলা হয়েছিল।

লিখিত জবাব শেষে শিবলী সাদিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে হোন্ডার শোডাউন, ব্যাপক সমাগম ও একটা মঞ্চের বিষয়সহ তিনটি অভিযোগ ছিল। সেগুলোতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কথা এসেছে। গতবার যেহেতু এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ (বিধিনিষেধ) ছিল না, ধারণা ছিল এবারও হয়তো তেমন কোনো অভিযোগ থাকবে না। এবার আচরণবিধিতে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। সমস্ত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমাদের জেনে নেওয়া উচিত ছিল।’

আরও পড়ুন

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পর ২৮ নভেম্বর সকালে শিবলী সাদিক তাঁর নির্বাচনী এলাকায় পৌঁছান। ঘোড়াঘাট উপজেলার মাজারপাড়া এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁকে সংবর্ধনা জানান। সেখান থেকে তিনি আজাদ মোড় এলাকায় আসেন। সেখানে তৈরি করা মঞ্চে বক্তব্য দেন তিনি। রানীগঞ্জ এলাকায় সংবর্ধনা শেষে নবাবগঞ্জ ও বিরামপুর উপজেলায় যান। পথে তাঁর সঙ্গে তিন শতাধিক মোটরসাইকেল, কিছু মাইক্রোবাস ও খোলা ট্রাকে প্রায় দুই হাজার মানুষের বিশাল বহর ছিল। এ সময় সড়কের বিভিন্ন এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।

কারণ দর্শানোর চিঠিতে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি বলেছিল, শিবলী সাদিক সম্প্রতি নির্বাচনী এলাকায় সহস্রাধিক নেতা-কর্মীসহ মোটরসাইকেল এবং গাড়ির বহর নিয়ে শোডাউন দেন। প্রচার ও সংবর্ধনায় অংশগ্রহণ করেন। এতে জনগণের চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। এসব কর্মকাণ্ডের চিত্র ফেসবুকে ছড়িয়েছে। এতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে। ফলে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

তবে শোভাযাত্রার বিষয়টি নির্বাচনী প্রচার ছিল না বলে দাবি করেন শিবলী সাদিক। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘স্থানীয়রা আমার আসবার কথা শুনে সেখানে জমায়েত হয়েছে, সংবর্ধনা দিয়েছে। একজন প্রার্থী হিসেবে আচরণবিধি বিষয়ে নির্বাচন কমিশনারের যে নির্দেশনা, সবকিছুকে মাথায় রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে আমরা সকল নিয়মকানুন মানতে বাধ্য। সেটাই অঙ্গীকার করেছি। পরবর্তী সময়ে এই ধরনের কোনো আচরণ আমাদের দ্বারা হবে না মর্মে লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছি।’

দিনাজপুর-৬ আসনে শিবলী সাদিক ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আজিজুল হক চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। দলীয় প্রার্থীর বিপরীতে ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শিবলী সাদিক বলেন, ‘যেকোনো নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকে। এবারের নির্বাচন কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে হচ্ছে। আমার ওখানে শুধু একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নয়, জাসদ এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থীও আছেন। শেষ পর্যন্ত কয়জন প্রার্থী থাকবেন, তা বলা যাচ্ছে না। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে আওয়ামী লীগের কোনো পদধারী মানুষ নৌকার বিরোধিতা করলে কেন্দ্র থেকে একটা উদ্যোগ গ্রহণের ব্যবস্থা আছে। জানি না দিনাজপুর-৬ আসনে সেটা প্রযোজ্য হবে কি না।’