‘বুড়িগঙ্গার খেয়াঘাটে এসে দেখি নৌকা চলাচল বন্ধ, পুলিশ বসে আছে’

আজ শুক্রবার সকাল থেকেই বুড়িগঙ্গা নদীর খেয়াঘাটগুলোতে নৌকা চলাচল বন্ধ আছেছবি: প্রথম আলো

রাজধানীতে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলোর সমাবেশকে কেন্দ্র করে বুড়িগঙ্গা নদীর বেশ কয়েকটি খেয়াঘাটে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল থেকেই খেয়াঘাটগুলোতে নৌকা চলাচল বন্ধ আছে। এ কারণে নদী পার হতে ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকে।

আজ সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর তিনটি প্রবেশমুখ কেরানীগঞ্জের বছিলা সেতুর কাছে ঘাটারচর এলাকায়, বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর কাছে কদমতলী এলাকায় এবং ঢাকা-মাওয়া সড়কের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঢাকাগামী যানবাহনগুলোতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

পুলিশের একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, বছিলা সেতুর কাছ থেকে ১৩ জন এবং বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু এলাকা ও বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর দক্ষিণ প্রান্ত থেকে ৭২ জনকে আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঢাকা নদীবন্দর সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চল থেকে যাত্রীবাহী লঞ্চ এসেছে ৩৩টি। বেশির ভাগ লঞ্চেই অতিরিক্ত যাত্রী ছিল।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমি পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকায় ইস্ট বেঙ্গল মার্কেটে চাকরি করি। আজ শুক্রবার ছুটির দিন থাকা সত্ত্বেও মালিক বলেছেন, সকাল সকাল দোকানে যেতে হবে। সকাল সাড়ে আটটায় পূর্ব আগানগর এলাকার আলম মার্কেট এলাকায় বুড়িগঙ্গার খেয়াঘাটে এসে দেখি নৌকা চলাচল বন্ধ। ঘাটে পুলিশ বসে আছে।’

কেরানীগঞ্জ এলাকায় তিনটি সেতুর প্রবেশমুখে বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে তল্লাশি করছে পুলিশ
ছবি: প্রথম আলো

জিনজিরা মান্দাইল এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ উম্মে কুলসুম বলেন, ‘আমার ভাই মিটফোর্ড হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ভর্তি আছে। সকাল সাড়ে আটটার দিকে ভাইয়ের জন্য নাশতা নিয়ে যাওয়ার জন্য জিনজিরা নাদু ব্যাপারীর ঘাটে এসে দেখি, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বসে আছে। নৌকা চলাচল বন্ধ, তাই ভাবছি বউবাজার সেতু দিয়ে হেঁটে হাসপাতালে চলে যাব।’

জিনজিরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আজাদুল্লাহ বলেন, রাজধানীতে বিএনপি-জামায়াতের সমাবেশকে কেন্দ্র করে কেউ যেন আগুন, সন্ত্রাস ও অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য তাঁদের নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছে।

আরও পড়ুন

জিনজিরা ফেরিঘাট এলাকার খেয়ানৌকার মাঝি আবদুল কুদ্দুস মিয়া বলেন, সকাল সাতটার দিকে তিনি ঘাটে এসে দেখেন পুলিশ বসে আছে। তিনি যাত্রী নিতে গেলে পুলিশ এসে জানায়, আজ এখানে নৌকা চালানো যাবে না। বিকেলে আসতে বলা হয় তাঁকে। এর পর থেকে তিনি তীরে বসে আছেন।

ঢাকা জেলা সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বলেন, রাজধানীতে সমাবেশকে কেন্দ্র করে কেউ যেন আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড না চালাতে পারে, সে জন্য পুলিশ ঢাকাগামী যানবাহনগুলোতে সন্দেহজনক লোকজনকে তল্লাশি করছে। আজ সকালে বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ নৌকা চলাচলে বাধা দিচ্ছে না। অভিযোগটি সঠিক নয়।