মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে আরও ৪৪ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ৪৪ জনকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাঁদের দেশের ভেতর ঠেলে পাঠিয়েছে। বিজিবি তাঁদের আটক করেছে। আটক সবাই বাংলাদেশের নাগরিক বলে বিজিবি নিশ্চিত করেছে। তাঁদের পুলিশে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
বড়লেখার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনুমান করা হচ্ছে, লাতু ও পাল্লাথল সীমান্তের মধ্যবর্তী কোনো স্থান দিয়ে ভোররাতে তাঁদের ঢুকিয়েছে। ৫টা ৫২ মিনিটের দিকে একজনের ফোনে আমি জানতে পারছি, কিছু লোক পাল্লাথল রাস্তা দিয়ে আসছেন। পরে বিজিবি তাঁদের আটক করেছে। ৪৪ জনের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী ও ১৩ শিশু আছে।’ চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, তাঁদের স্থানীয় একটি বালিকা বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে।
বিজিবি-৫২–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ৪৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে নারী-শিশু আছে। ভোরের দিকে তাঁদের ঠেলে দিয়েছে। সকাল থেকে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। নিশ্চিত হওয়া গেছে, তাঁরা বাংলাদেশি। তাঁদের বাড়ি নীলফামারী, কুড়িগ্রামের দিকে। সবাইকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হবে। তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ ক্ষমতা দিয়ে পুশব্যাক ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এরিয়া বড়, পাহাড়ি এলাকা। একটা পিলার থেকে আরেক পিলারে যেতে এক ঘণ্টা সময় লাগে।’
প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, ৭ মে থেকে আজ ১৪ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের চার জেলার সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ২৭২ জনকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬ জনকে খাগড়াছড়ি, ৭৮ জনকে সাতক্ষীরা, ১১৮ জনকে মৌলভীবাজার এবং ১০ জনকে মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে পাঠানো হয়েছে।
৯ মে শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৮ জনকে ফেলে রেখে যায় বিএসএফ। তাঁরা কয়েক দিন না খেয়ে থাকার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের মধ্যে একজনের হাত ভেঙে গেছে আর কয়েকজনের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে। ভুক্তভোগীদের ভাষ্য অনুসারে, তাঁদের বেশ নিষ্ঠুরতার সঙ্গে চোখ বেঁধে গুজরাট থেকে উড়োজাহাজ-লঞ্চে করে বাংলাদেশে আনা হয়েছে।