কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক নিহতের অভিযোগে মামলা

সীমান্ত
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় একটি ঝুপড়ি থেকে যুবকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। নিহত যুবকের বাবা বাদী হয়ে গত রোববার দিনগত রাত ১২টার পর রৌমারী থানায় এ মামলা করেন। সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রূপকুমার সরকার প্রথম আলোকে মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ভারতীয় সীমান্তে মানিক মিয়া হত্যার ঘটনায় নিহত যুবকের বাবা বাদী হয়ে বিএসএফের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ওসি আরও বলেন, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনের প্রাথমিকভাবে বাঁ পাঁজরে একটি ছোট ফুটো এবং বুকের ডান দিকে আরেকটি ফুটো ছিল। উদ্ধার হওয়া লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল সোমবার সকালে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

এর আগে রোববার বিকেলে উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের একটি ঝুপড়ি থেকে মানিক মিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বেহুলারচর গ্রামের আবদুল বাতেনের ছেলে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, সীমান্তে অবৈধ পথে গরু পাচার করতে গিয়ে বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে মানিক নিহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রোববার ভোরে একদল গরু ব্যবসায়ী মোল্লারচর সীমানাপিলারের পাশ দিয়ে অবৈধভাবে ভারতীয় গরু পাচার করছিলেন। এ সময় টহলরত কুচনিমারা ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে পরপর চারটি গুলি করেন। এতে মানিক মিয়া বুক ও কোমরে গুলিবিদ্ধ হয়ে ভারতের অভ্যন্তরে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে রৌমারী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তাঁরা মামলার ভয়ে উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাঞ্ছারচর গ্রামের নিহত মানিকের খালাতো ভাই আবদুল মোতালেবের বাড়িতে লাশ নিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে রোববার বিকেলে পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

শৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় সীমান্তে অবৈধ পথে গরু পাচার করতে গেলে বিএসএফের গুলিতে মানিক মিয়ার মৃত্যু হয়। তিনি সীমান্তে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। রৌমারী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা। এসব সীমান্ত এলাকায় কয়েক শ যুবক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।

আরও পড়ুন

রৌমারীর ওই সীমান্ত এলাকা জামালপুর বিজিবি-৩৫ ব্যাটালিয়নের অধীন। ৩৫ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল মাশরুকি আজ সকাল সাড়ে নয়টায় প্রথম আলোকে বলেন, সীমান্তে গুলির ঘটনায় গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার সময় বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছেন। বিএসএফের পক্ষ থেকে গুলির ঘটনা স্বীকার করা হয়েছে। বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে সীমান্তহত্যার তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

আবদুল্লাহ আল মাশরুকি আরও বলেন, নিহত যুবকের বাবার মামলা করার তথ্য তাঁর কাছে নেই।