শাহীনুজ্জামান উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকছেদ আলীর ছেলে। শাহীনুজ্জামান পেশায় পত্রিকার এজেন্ট। প্রতিদিন পত্রিকা বিক্রি করে মাসে আয় করেন ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা। এই আয় দিয়েই সংসার ও অন্য ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালাতে হয়। এর মধ্যে সাব্বিরকে কীভাবে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করবেন, তা নিয়ে তিনি বিপাকে পড়েছেন।

সাব্বির ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছিলেন তিনি। এরপর সাব্বির সখীপুরের পাহাড় কাঞ্চনপুর বিমানবাহিনী ঘাঁটিতে অবস্থিত বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও ঢাকার নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসিতে পাস করেন। এসএসসি ও এইচএসসি—দুই পরীক্ষাতেই জিপিএ-৫ পেয়েছেন সাব্বির। তাঁর আরও এক ভাই ও বোন আছে।

এ সাফল্যের জন্য মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞ সাব্বির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অক্লান্ত পরিশ্রম করে মা-বাবা আমাকে এত দূরে এনেছেন। আমার দাদা বেঁচে থাকলে হয়তো অনেক খুশি হতেন। আমার বাপ-দাদার স্বপ্ন পূরণ করে আমি যেন মানবিক চিকিৎসক হতে পারি, এই দোয়া চাই সবার কাছে।’

সাব্বিরের বাবা শাহীনুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন ‘অন্যদের মতো আমার ছেলের পেছনে তেমন খরচ করতে পারিনি। এত কষ্টের মধ্যেও সে শুধু নিজের চেষ্টায় এত দূর এগিয়ে গেছে, এ জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। ছেলেকে ডাক্তারি পাস করাতে পারলে আর কোনো চাওয়া নাই। কিন্তু এ জন্য তো অনেক টাকা দরকার হবে। এত টাকা কোথায় পাব, এই চিন্তাই এখন বেশি।’

সখীপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, শাহীনুজ্জামান তাঁর ছেলেকে ঢাকার নটর ডেম কলেজে পড়াশোনা করাতে গিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন। ধারদেনা করে তিনি ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করাচ্ছেন। সাব্বির পড়াশোনা করে অনেক বড় চিকিৎসক হবেন, দেশ ও দশের সেবা করবেন—এমন প্রত্যাশা তাঁদের। সাব্বিরের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।