সন্দ্বীপ উপকূলে গোলাগুলিতে দুজন নিহত, গুলিবিদ্ধ ৪

গুলিবিদ্ধ দুজনকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে
ছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর চরাঞ্চলের কাছাকাছি সন্দ্বীপ উপকূলে গোলাগুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যার আগমুহূর্তে মেঘনা নদী ও সন্দ্বীপ চ্যানেলের সংযোগস্থল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আরও চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং দুজনকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কোস্টগার্ডের সদস্যরা গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের উদ্ধার করে গতকাল দিবাগত রাত একটার দিকে সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ সময় চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মানস বিশ্বাস।

আরও পড়ুন

একই ঘটনায় জিল্লুর রহমান (৩২) ও নুর আলম মিয়া (৩৫) নামের গুলিবিদ্ধ আরও দুজনকে গতকাল রাত ১১টার দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের মধ্যে জিল্লুর নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ গ্রামের ভুলু মাঝির ছেলে এবং নুর আলম একই উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চরতরাব আলী গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে।

কোস্টগার্ড চট্টগ্রামের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তাহসিন রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নোয়াখালীর চরাঞ্চলের কাছাকাছি সন্দ্বীপ উপকূলে কিছু চর জেগে উঠেছে। সদ্য জেগে ওঠা চরগুলোয় অবৈধ চরঘেরা জাল দিয়ে মাছ ধরেন জেলেরা। ওই মাছ ধরা নিয়ে সন্দ্বীপ ও নোয়াখালীর দুই পক্ষের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ হয়। কখনো একটি পক্ষ দখল করে মাছ ধরে; আবার কখনো অন্য পক্ষ দখল করে মাছ ধরে। গতকাল বিকেলে উপজেলা মৎস্য বিভাগ ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা অবৈধ চরঘেরা জাল উচ্ছেদ অভিযানে যান। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে থেকেই দুই পক্ষের গোলাগুলি চলছিল। পরে কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে উভয় পক্ষ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তখন সেখানে চারজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে ছিলেন।

লেফটেন্যান্ট তাহসিন রহমান আরও বলেন, হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্য দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। নিহত দুজন গুলিবিদ্ধ ছাড়াও তাঁদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের কোপ আছে।

এ ব্যাপারে জানতে সন্দ্বীপ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁরা সাড়া দেননি।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তৈয়ব মো. আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, হতাহত ব্যক্তিদের যখন সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়, তখন কোস্টগার্ডের পাশাপাশি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। দুটি লাশ ও আহত দুজনকে পেয়েছেন তাঁরা। তবে ঘটনাস্থলে কী ঘটেছিল তাঁরা বিস্তারিত জানেন না। এ বিষয়ে তাঁরা জানার চেষ্টা করছেন।