নোয়াখালীতে ভোটের রাতে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলার রায় আগামীকাল
পাঁচ বছর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দলবদ্ধ ধর্ষণের আলোচিত ঘটনার মামলার রায় আগামীকাল সোমবার ঘোষণা করা হবে। নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস মামলাটির রায় ঘোষণা করবেন। এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি মামলাটির রায় ঘোষণার তারিখ ছিল। কিন্তু রায় লেখার কাজ শেষ না হওয়ায় তারিখ পিছিয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি পুনর্নির্ধারণ করা হয়।
আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. সামছুদ্দিন গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণার পূর্ববর্তী সব কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তাই নির্ধারিত তারিখে, অর্থাৎ আগামীকাল রায় ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, গত ২৯ নভেম্বর অধিকতর যুক্তিতর্ক শেষে ১৬ জানুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু রায় লেখার কাজ শেষ না হওয়ায় সেদিন রায় ঘোষণা করা হয়নি। একই দিন (১৬ জানুয়ারি) রায় ঘোষণার পরবর্তী তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হয়।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) মারধর ও দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী। ওই নারীর অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জেরে হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি তখন দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।
ওই ঘটনার পরদিন নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে চর জব্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কার হওয়া প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মামলার বাদী নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী আজ রোববার সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, রায়কে ঘিরে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে আছেন। কারণ, আসামিরা প্রভাবশালী ও খারাপ লোক। তিনি আতঙ্কের বিষয়টি সুবর্ণচরের চর জব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামকে জানিয়েছেন। আগামীকাল রায় ঘোষণাকালে স্ত্রীসহ আদালতে উপস্থিত থাকবেন বলে জানান তিনি।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি সালেহ আহমদ সোহেল খান প্রথম আলোকে বলেন, আলোচিত ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। ১৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একজন আসামি মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) ঘটনার পর থেকে পলাতক।
আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা বারের সাবেক সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রছুল প্রথম আলোকে বলেন, সুবর্ণচরে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের সেই আলোচিত ঘটনায় কারাগারে থাকা ১৫ আসামির মধ্যে কমপক্ষে আটজন নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আগামীকাল মামলাটির রায় ঘোষণার কথা আছে।