জামালপুরে যমুনায় পানি কমছে, এখনো পানিবন্দী ৪২ হাজার মানুষ

যমুনা নদীর পানিতে তলিয়ে যাওয়া সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। শনিবার সকালে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বলিয়াদহ-আমতলী সড়কে
ছবি: প্রথম আলো

জামালপুরে যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। আজ রোববার ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার কমেছে। তবে এখনো বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ৪২ হাজার ৪২০ জন মানুষ পানিবন্দী আছেন।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ৮টি করে ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার আংশিক বন্যাকবলিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে পানিবন্দী হয়েছেন প্রায় ৮ হাজার মানুষ। সব মিলিয়ে এখনো ৪২ হাজার ৪২০ জন পানিবন্দী আছেন। প্রায় ১ হাজার ২৫৬ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ২২টি গরুর খামার বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। ২৫টি পুকুর তলিয়ে গেছে। ২৫টি বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ২৫ কিলোমিটার রাস্তা। এ ছাড়া মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে।

আরও পড়ুন

আজ সকাল ১০টার দিকে জামালপুর পাউবোর পানি পরিমাপক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, গত পাঁচ ঘণ্টায় ৬ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। এখন বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে খুব দ্রুতগতিতে পানি কমছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় পানি আরও কমার সম্ভাবনা আছে। তবে এখনো মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছেন। লোকালয় থেকে পানি কমতে একটু সময় লাগবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন যমুনা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষ। এসব অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ হতদরিদ্র। যমুনার ঢলে অনেকের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছয় দিন ধরে পানিবন্দী হয়ে থাকায় অনেক দিনমজুরের আয়রোজগার বন্ধ। যমুনার পানিতে ২৭ আগস্ট রাত থেকে নদীতীরবর্তী চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করে। গত বুধবার থেকে এসব এলাকার বেশির ভাগ লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে।

বন্যায় বাড়ির আঙিনায় হাঁটুসমান পানি। রোববার সকালে ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নের দক্ষিণ গিলাবাড়ি গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, যমুনার পানি কমতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বন্যাকবলিত এলাকায় ৩৯ মেট্রিক টন চাল ও ৫৪৯ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় ১০০ মেট্রিক টন চাল ও ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিশু খাদ্য ও গোখাদ্য ক্রয়ের জন্য আরও ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। বরাদ্দ দেওয়া ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

আরও পড়ুন