কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমানকে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান ওই নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন।

নোটিশে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ক্ষুধা–দারিদ্র্যমুক্ত একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে দলীয় নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। সেখানে তাঁর এমন আপত্তিকর কার্যক্রম নেতা-কর্মীদের কাম্য নয়। এমন অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী ১০ দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন

দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৬ এপ্রিল উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন শাখা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রুমান হাসনাতের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান মুঠোফোনে কথা বলেন। কথোপকথনের একপর্যায়ে মাহবুবুর রহমান উত্তেজিত হয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য মো. মহিব্বুর রহমানকে নিয়ে কিছু কথা বলেন। সে কথোপকথনের অডিও ৭ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। মুঠোফোনের ওই অডিওতে মাহবুবুর রহমানকে বলতে শোনা যায়, ‘বর্তমান সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান রাতের ভোটে এমপি হইছে। তাকে শেখ হাসিনা মনোনয়ন দেয়নি।’ এ ছাড়া ওই অডিওতে তিনি রুমান হাসনাতকে হুমকি দিয়ে আরও বলেন, আওয়ামী লীগ করতে হলে তাঁর কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিতে হবে।

মো. মাহবুবুর রহমানের এমন বক্তব্যে পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মো. মহিব্বুর রহমানের অনুসারী নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হন। এর প্রতিবাদে এক সপ্তাহ ধরে কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়, হাটবাজারে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা মাহবুবুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান।

ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন শাখা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রুমান হাসনাত বলেন, ‘আমি এমপি মহিব্বুর রহমানের ছবি দিয়ে ফেসবুকে “মানবতার ফেরিওয়ালা” লিখে পোস্ট দিয়েছিলাম। এটা দেখে মাহবুব তালুকদার ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মুঠোফোনে কল করেন এবং হুমকি–ধমকি দেন। এমনকি বর্তমান সংসদ সদস্যকে নিয়েও তিনি বাজে মন্তব্য করেন।’

কারণ দর্শানোর নোটিশের বিষয়ে মো. মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি গতকাল শনিবার নোটিশ পেয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব এ নোটিশের জবাব দেব। এ নোটিশের বিষয়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ যে নেতাদের অবহিত করা হয়েছে, আমি তাঁদেরসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেও নোটিশের জবাবের কপি পৌঁছে দেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান আমার আপন ফুফাতো ভাই। তাঁর বাবা আমার ফুফা। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি তাঁর গ্রামের বাড়িতে আশ্রয় নিতে গেলে তিনি আমাকে আশ্রয় দেননি। এমনকি আমাকে না খাইয়ে তাড়িয়ে দেন। মহিব্বুর রহমানের বাবা কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন।’