মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল এসে পড়ল বীর মুক্তিযোদ্ধার উঠানে

মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল এসে পড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের উঠানে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের মধ্যমপাড়া এলাকায়ছবি: এস এম হানিফ

মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল এসে পড়েছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের মধ্যমপাড়ায়। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে।

মর্টার শেলটি ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের বাড়ির উঠানের আমগাছে লেগে মাটির নিচে ঢুকে যায়। এতে কেউ হতাহত না হলেও বসতঘরের কাচের জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আরও পড়ুন

ঘুমধুমের বেতবুনিয়া বাজার থেকে পূর্ব দিকে পাহাড়ের ওপর মধ্যমপাড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের বসতঘর। আজ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বসতঘরের পশ্চিম পাশে উঠানে আমবাগান। আমবাগানের একটি গাছে মর্টার শেলটি আঘাত করে। পরে মর্টার শেলটি মাটি ভেদ করে কিছুটা ঢুকে যায়। মর্টার শেলের কয়েকটি অংশ আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে নুরুল ইসলামের বসতঘরের কাচের দুটি জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মর্টার শেলটি প্রথম আঘাত করে একটি আমগাছে। পরে সেটি মাটি ভেদ করে কিছুটা ঢুকে যায়
ছবি: প্রথম আলো

ঘটনার সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাড়িতে ছিলেন না। তিনি বলেন, তাঁর নাতি ফোন করে জানায়, বসতঘরের উঠানে গোলা পড়েছে। এতে বাড়ির সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘এখন আমরা বসতঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। খুবই ভয় পেয়েছে পরিবারের সদস্যরা।’

আরও পড়ুন

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ও উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ওপারে মিয়ানমারের ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি। এ চৌকির দখলকে কেন্দ্র করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি (এএ) ও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে রোববার রাত ১১টা থেকে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে চলেছে। এর মধ্যে সোমবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে একটি মর্টার শেল ঘুমধুমের জলপাইতলী গ্রামে এসে পড়লে দুজন নিহত হন। এরপর আতঙ্ক বেড়ে যায় সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে।

আরও পড়ুন
মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলে দুজন নিহতের পরদিন আবারও মর্টার শেল এসে পড়ায় আতঙ্কিত মানুষেরা
ছবি: প্রথম আলো

কয়েক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে রাত ৯টা থেকে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সংঘর্ষ সবচেয়ে ভয়াবহ হয়। রাতের অন্ধকারে হেলিকপ্টার থেকে গোলা ফেলা হয়, মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হয়। এভাবে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত চলে। সংঘর্ষের গোলাবারুদ এসে পড়ছে বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, গত রাত নির্ঘুম রাত পার করেছে মানুষ। মর্টার শেলে দুজন নিহত হওয়ার পর আতঙ্ক দ্বিগুণ বেড়েছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। অপ্রয়োজনে কাউকে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন