‘পাপিয়া-কাণ্ডে’ অভিযুক্ত মেট্রন ফাতেমাকে পাঠানো হলো যশোরে

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার
ফাইল ছবি

গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনায় অভিযুক্ত মেট্রন ফাতেমা আক্তারকে রাখা হয়েছিল রিজার্ভ হিসেবে। গতকাল বুধবার বিকেলে তাঁকে বদলি করা হয়েছে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে। এ নিয়ে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সবাইকে বদলি করা হলো। নতুন মেট্রন হিসেবে যোগ দিয়েছেন মোছা. লুৎফুন্নেছা।

অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মেট্রন ফাতেমা আক্তারকে বদলি এবং তাঁর স্থলে মোছা. লুৎফুন্নেছাকে দায়িত্ব দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। লুৎফুন্নেছা এর আগে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১–এর দায়িত্বে ছিলেন।

এর আগে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ওবায়দুর রহমানকে রাজশাহী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া দায়িত্বে অবহেলার কারণে গত ৩০ জুলাই কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের ছয় কারারক্ষীকে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বদলি করা হয়।

আরও পড়ুন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাশিমপুর কারাগারের এক কর্মকর্তা বলেন, ওই কারাগারের জেলার ফারহানা আক্তার ও মেট্রন ফাতেমা আক্তারের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় বন্দী নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত থাকাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ আছে। এক বন্দীর ভাই লিখিতভাবে তাদের দুজনের বিরুদ্ধে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেন। এ ঘটনার তদন্তে আওয়ামী যুব মহিলা লীগের সাবেক নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার নাম আসে। তদন্তে প্রমাণ মিলে ফারহানা আক্তার দায়িত্ব পালনকালে পাপিয়াকে অনৈতিক সুবিধা দিয়েছেন।

কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ৩০ জুলাই পাঠানো একটি আদেশে একযোগে ছয় কারারক্ষীকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়। কারারক্ষী আলেয়া চৌধুরীকে লক্ষ্মীপুর, শাম্মী আক্তারকে সুনামগঞ্জ, মোছা. সোহেলা আক্তারকে ঝালকাঠি, সেলিনা আক্তারকে শেরপুর, ঝর্ণা আক্তারকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও লাকী আক্তারকে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ৩ আগস্ট কারাগারের সুপার ওবায়দুর রহমানকে বদলি করা হয়।

আরও পড়ুন

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১–এর জেল সুপার ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার মো. শাহজাহান আহমেদ মেট্রন ফাতেমা আক্তারকে বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কারাগার সূত্রে জানা যায়, পাপিয়াকে গ্রেপ্তারের পর গাজীপুরের কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সের ভেতরে কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে রাখা হয়। তিনি অপরাধ কার্যক্রম শুরু করেন কারাগারের ভেতরেও, গড়ে তোলেন অনুগত বাহিনী। অভিযোগ আছে, কারাগারে বন্দী ও অন্য নারীদের কাছ থেকে তিনি টাকাপয়সা ও জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিতেন। তাঁদের ওপর চালাতেন নির্যাতন। কয়েক কারারক্ষী ও নারী বন্দী তাঁর এসব কাজে সহযোগিতা করতেন।

আরও পড়ুন

ঢাকায় আদালতে নথি চুরির অভিযোগে এক শিক্ষানবিশ আইনজীবীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠায়। কারাগারে থাকা অবস্থায় তাঁকে নির্যাতন করা হয়। গত ২৫ জুন ওই নারী আইনজীবীর ভাই গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে তাঁর বোনকে নির্যাতনের ঘটনার বিচার দাবি করেন। এ অভিযোগ তদন্তে পাপিয়ার নাম এলে তাঁকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন