আজ বুধবার দুপুরে রংপুর নগরের গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে গণ–অবস্থান কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন ইকবাল হাসান মাহমুদ। সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে বিভাগীয় এই গণ–অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
পুলিশ বাহিনীর সমালোচনা করে ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘পাকিস্তান আর্মির কম ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু তারা ইয়াহিয়াকে টিকিয়ে রাখতে পারে নাই। তাই জনগণের বাহিনী হতে না পারলে পুলিশের কপালে দুর্গতি আছে, এখনই সাবধান হোন। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে আমরা সরকারকে বাধ্য করব। আমাদের আন্দোলনে জনগণ সঙ্গে আছে। এ সরকারকে জনগণের আন্দোলনের কাছে মাথা নত করতে হবে। জনতার কাছে মাথা নত করে আইয়ুব, ইয়াহিয়া, এরশাদ সরকার আর টিকে থাকতে পারেনি, সুতরাং আওয়ামী লীগ সরকারও টিকতে পারবে না। গত বছর আমরা আন্দোলনের এক ধাপ পার করেছি, এই বছর শুরু করলাম। যত দিন শেখ হাসিনার পদত্যাগ না করবে, লাগাতার আন্দোলন চলবে।’
এর আগে সকাল ১০টার দিকে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, মহিলা দল, ওলামা দলসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে রংপুর নগরের গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আসতে শুরু করেন। গণ–অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি বিএনপির কার্যালয় থেকে শাপলা চত্বর ও জাহাজ কোম্পানি মোড় পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়।
সমাবেশে রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশিদ, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিবসহ কেন্দ্রীয় ও আট জেলা থেকে আসা নেতারা। এ ছাড়া বক্তব্য দেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, মহানগরের সদস্যসচিব মাহফুজ উন-নবীসহ আরও অনেকে।
সমাবেশে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশিদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ গোটা দেশকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। গণতন্ত্র নেই, মানুষের স্বাধীনতা নেই। আমরা সমাবেশ ডাকলে তিন-চার দিন হরতাল দেয় সরকার। আর শেখ হাসিনা সমাবেশ করলে পুলিশ-বিজিবি-র্যাব দিয়ে পাহারা দিয়ে সমাবেশ করা হয়। এভাবে আর চলতে দেওয়া হবে না। আজ আমাদের নেতা-কর্মীদের পথে পথে বাধা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারদের সতর্ক করে দিচ্ছি, এই সরকারের সময় ঘনিয়ে আসছে।’
এদিকে বিএনপির গণ–অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে যেকোনো ধরনের নাশকতা, সহিংসতা ও অরাজকতা মোকাবিলায় প্রস্তুত ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। সকাল থেকে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নগরের বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল চত্বর, প্রেসক্লাব চত্বর, জাহাজ কোম্পানি মোড়ে অবস্থান করেন। সতর্ক অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও। নগরের মোড়ে মোড়ে পুলিশের পাশাপাশি সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা যায়।
অন্যদিকে গণ–অবস্থান কর্মসূচির কারণে শাপলা চত্বর থেকে জাহাজ কোম্পানি মোড় পর্যন্ত সড়কের এক পাশের যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষজন।