গঠনতন্ত্র না মেনে ‘অছাত্র’ ও বিবাহিত ব্যক্তিদের নিয়ে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রতিবাদে বরিশালে লাগাতার কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত পক্ষের নেতা-কর্মীরা। এর অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন।
পদবঞ্চিত পক্ষের ছাত্রলীগের নেতারা বলছেন, বিতর্কিত এ কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি চলবে। গত সোমবার থেকে বরিশাল নগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন তাঁরা। গতকাল বুধবারও নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এরপর আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীরা বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের অনুসারী। জাহিদ ফারুক বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। অন্যদিকে আহ্বায়ক কমিটিতে পদ পাওয়া সবাই বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী।
মহানগর ছাত্রলীগের ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন হয় গত শনিবার। শনিবার রাতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান তাঁর ফেসবুক পেজে এই কমিটির তালিকা প্রকাশ করেন। সংগঠনের প্যাডে তিন মাসের জন্য করা ওই অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির অনুমোদন দিয়ে সই করেন সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। কমিটিতে রইজ আহমেদ ওরফে মান্নাকে আহ্বায়ক এবং মো. মাইনুল ইসলাম ও আরিফুর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়।
ঘোষিত এই আহ্বায়ক কমিটি প্রত্যাখ্যান করে তা বাতিলের দাবিতে গত সোমবার নগরে প্রথম বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্ব পাওয়া ছাত্রলীগের বিবাহিত নেতা ও তাঁদের স্ত্রী-সন্তানদের ছবিসংবলিত পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড বহন করে কমিটি বাতিলের দাবি জানান।
পদবঞ্চিতদের দাবি, সদ্যঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির অধিকাংশের ছাত্রত্ব নেই। আহ্বায়ক রইজ আহমেদ বিবাহিত এবং তাঁর সন্তান আছে। দুই যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমান ওরফে শাকিল ও মাইনুল ইসলামও বিবাহিত। এ ধরনের কমিটির ঘোষণা দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির ভূমিকা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, আজ সকাল সাড়ে ৮টায় তাঁরা বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেখানে তাঁরা ব্যানার নিয়ে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন। পরে তাঁরা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেন।