পটুয়াখালীর ১০ সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পাঠাগার উপহার পেল বই

প্রথম আলো ট্রাস্ট ও বিকাশের উদ্যোগে পটুয়াখালীতে ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পাঠাগারে বই উপহার দেওয়া হয়েছে। প্রেসক্লাবের ড. আতহার উদ্দিন মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালী জেলার ১০টি সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পাঠাগারে প্রথম আলো ট্রাস্ট ও বিকাশের উদ্যোগে ৪ হাজার ৪০০ বই উপহার দেওয়া হয়েছে। রোববার পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের ড. আতহার উদ্দিন মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সকাল সাড়ে ১০টায় বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন পটুয়াখালী এ কে এম কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আ ন ম সাইফুদ্দিন। সাইফুদ্দিন বলেন, ‘বইয়ের চেয়ে ভালো বন্ধু আর হয় না। অথচ বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম বই পড়ে না। তাদের বইমুখী করতে হবে। সেরা লেখকদের এসব বই এলাকার তরুণ প্রজন্ম ও পাঠকদের পাঠাভ্যাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিকাশ ও প্রথম আলো ট্রাস্টের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’

বই পাওয়া পাঠাগারগুলো হলো রাঙ্গাবালীর চর মোন্তাজ ইউনিয়নের ভাসমান জেলে সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য গড়ে তোলা চর মোন্তাজ শিশু বাগান বোর্ড স্কুল পাঠাগার, পটুয়াখালী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুল পাঠাগার, আউলিয়াপুর মোল্লাস্টান্ড নুরানী হাফেজি মাদ্রাসা পাঠাগার, মির্জাগঞ্জ উপজেলার মনোহরখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় পাঠাগার, বন্ধু গ্রন্থাগার, কলাপাড়া উপজেলায় নুর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চাকামইয়া বেতমোর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দুমকি উপজেলার তরুণ সংসদ, গলাচিপা উপজেলার উত্তর চরখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও প্রথম আলো পাঠাগার।

বই বিতরণের আগে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন পটুয়াখালী এ কে এম কলেজের সাবেক সহকারী অধ্যাপক অশোক কুমার দাস, দুমকির মুরাদিয়া মহিলা ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক সোহরাব হোসেন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া হৃদয় ও বন্ধুসভার উপদেষ্টা মিজানুর রহমান।

প্রথম আলো ট্রাস্ট ও বিকাশের উদ্যোগে পটুয়াখালীতে ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পাঠাগারে বই উপহার দেওয়া হয়েছে। প্রেসক্লাবের ড. আতহার উদ্দিন মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

চর মোন্তাজ শিশু বাগান বোর্ড স্কুলের শিক্ষক মো. হানিফ মাহামুদ বলেন, ‘আসলে আমাদের স্কুলে মানতা সম্প্রদায়ের (ভাসমান জেলে) সন্তানেরা পড়াশোনা করেন। ভাসমান এই স্কুলের শিশুদের জন্য উপহারের বইগুলো পেয়ে আমরা আনন্দিত। এ বইয়ের মাধ্যমে আমাদের স্কুলের পাঠাগারটি আরও সমৃদ্ধ হবে। বইগুলো শিশুদের জন্য খুবই আকর্ষণীয়। বই পেয়ে তারা আনন্দিত হবে ও পড়ায় মনোযোগী হবে।’

পটুয়াখালী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাকসুদা লাইজু জানান, এ বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিশুই সুবিধাবঞ্চিত। অনেকেরই বই কেনার সামর্থ্য নেই। তাদের জন্য আলাদা করে পাঠাগারের কেউ চিন্তা করে না। স্কুলে ছোট আকারে পাঠাগার থাকলেও শিশুদের উপযোগী তেমন বই ছিল না। বিকাশ ও প্রথম আলো ট্রাস্ট থেকে শিশুদের উপযোগী বই দেওয়ায় শিশুরা উপকৃত হবে।

আউলিয়াপুর মোল্লা স্ট্যান্ড নুরানী হাফেজি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম জানান, এ মাদ্রাসায় নিম্ন আয়ের পরিবারের শিশুরা লেখাপড়া করে। শিশুদের হাতে লেখাপড়ার ভালো বই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দিতে পারে না। লেখাপড়ায় এভাবে প্রথম আলো সব সময় এগিয়ে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মির্জাগঞ্জের বন্ধু গ্রন্থাগারের সাধারণ সম্পাদক রাজীব হোসেন জানান, ‘প্রথম আলো ভালো কাজ করে। আজকে তা আবার দেখতে পেলাম। উপজেলা পর্যায়ে বাছাই করে বিভিন্ন পাঠাগারকে বই দেওয়া তাদের আরও একটি ভালো কাজ। প্রথম আলো এভাবে সারা দেশে স্কুলের ছেলেমেয়েদের পাঠাগারে যেতে আরও উৎসাহিত করবে।’

আয়োজকেরা বলেন, বিকাশ সারা বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাঠাগার ও বৃদ্ধাশ্রমে মোট ৭৫ হাজার বই বিতরণ করছে। আর বিকাশের নেওয়া এই বই বন্ধনের উদ্যোগের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে আছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে প্রথম আলো ট্রাস্টে বই কেনার জন্য অনুদানও দিতে পারেন গ্রাহক। অসংখ্য মানুষের ছোট ছোট অনুদানকে একত্র করে এই উদ্যোগের আওতায় ২০২২ সাল পর্যন্ত ৭২ হাজার ৫০০টি বই বিতরণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের বই বিতরণ চলমান রয়েছে।

আরও পড়ুন