শোভাযাত্রা করে বিএনপি নেতা মোবাশ্বের বললেন, মনোনয়নবঞ্চিত হওয়া মানে পরাজয় নয়

কুমিল্লা-১০ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার সমাবেশ। আজ বুধবার বিকেলে নাঙ্গলকোট উপজেলা সদরের হাসান মেমোরিয়াল সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠেছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট ও লালমাই উপজেলা) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া হাজারো নেতা-কর্মী নিয়ে ‘বিজয় র‍্যালি’ করেছেন। সেখানে তিনি বলেন, মনোনয়নবঞ্চিত হওয়া মানে পরাজয় নয়।

আজ বুধবার বিকেলে নাঙ্গলকোট উপজেলা সদরের হাসান মেমোরিয়াল সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে শোভাযাত্রা–পূর্ব সমাবেশ করেছেন তিনি। পরে নাঙ্গলকোট বাজার এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ সড়কে হাজারো নেতা-কর্মী নিয়ে শোভাযাত্রা করেন। ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত এবং মহান বিজয় দিবস’ উপলক্ষে এই শোভাযাত্রার আয়োজন করেন মোবাশ্বের ভূঁইয়া।

তবে তফসিল ঘোষণার পর এভাবে সমাবেশ ও শোভাযাত্রা করা আচরণবিধি লঙ্ঘন বলে জানিয়েছেন নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা লিজা আক্তার (বিথী)। আজ সন্ধ্যায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এভাবে শোভাযাত্রা ও সমাবেশ করা আচরণবিধির লঙ্ঘন। আমরা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। এরপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গত ৩ নভেম্বর কুমিল্লা-১০ আসনে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা ও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফুর ভূঁইয়াকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া। এবারও তিনি মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই মোবাশ্বের আলমের অনুসারী নেতা-কর্মীরা রেলপথ অবরোধ, মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ, মশালমিছিল, সমাবেশসহ ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন।

আজ বিকেলে সমাবেশে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘কুমিল্লা-১০ আসনে মনোনয়ন নিয়ে যে ষড়যন্ত্র হয়েছে, এটা শুধু কুমিল্লা নয়, সারা দেশের মানুষ জানে। তবে একটা কথা বলে যাই, নবাব সিরাজউদ্দৌলার পর মীরজাফর আলী খানও কিন্তু নবাব হয়েছে। কিন্তু তাঁকে কখনো কেউ নবাব বলে না। তেমনি মনোনয়নবঞ্চিত হওয়া মানে পরাজয় নয়। আর এই আসনে যাকে দল থেকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তিনি যে বিজয়ী হয়েছেন, সেটাও কিন্তু না।’

মনোনয়নপ্রাপ্ত আবদুল গফুর ভূঁইয়ার সমালোচনা করে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘তিনি দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়ে বিভিন্ন স্থানে বলেছেন, মোবাশ্বের ভূঁইয়ার সঙ্গে প্রতিটা ইউনিয়নে যুবদলের ১০ থেকে ১৫ জন নেশাখোর ছাড়া আর নাকি কেউ নেই। এই বিজয় র‍্যালিতে ৫০ হাজারের বেশি লোক উপস্থিত রয়েছেন। এতে প্রমাণিত হয় নাঙ্গলকোটে আমার নয়, অস্তিত্ব নেই তাঁর। তবে আমিও বলি আমরা নেশা করি। সেই নেশা হচ্ছে, ধানের শীষের নেশা, বিএনপির নেশা।’

আরও পড়ুন

মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘২০০৮ সালে দল আমাকে ধানের শীষ প্রতীক দিয়েছিল। তিনি (আবদুল গফুর ভূঁইয়া) তখন ধানের শীষ প্রতীকের বিরোধিতা করে নৌকার পক্ষে কাজ করেছিলেন। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন–সংগ্রামে আমি মাঠে ছিলাম। আর যাকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, আমরা তাকে মাঠে দেখিনি।’

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাঙ্গলকোট পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুল আমিন, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার, নাঙ্গলকোট উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম, সদস্যসচিব কামরুজ্জামান প্রমুখ।