পটুয়াখালীতে বিএনপির সঙ্গে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। পটুয়াখালী সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিপুল হালদার বাদী হয়ে গত রোববার রাতে মামলাটি করেছেন। এ মামলায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব স্নেহাংশু সরকারকে প্রধান আসামিসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত শনি ও রোববার জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা করা হয়। এ নিয়ে বিএনপি ও ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হলো। তিনটি মামলায় ৬৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি জনসমাবেশ করে। এদিন জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে শান্তি সমাবেশ ঘোষণার পর বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া সংঘর্ষের কারণে বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে সিঙ্গারা পয়েন্ট পর্যন্ত পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ তিনটি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়।
যুবলীগের মামলায় ছাত্রলীগ কর্মী আসামি
এদিকে জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে করা মামলায় জেলা ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মীর নাম উল্লেখ করা নিয়ে দলের মধ্যে নানা আলোচনা চলছে। মো. লিটন নামের ছাত্রলীগের এক কর্মীকে মামলার ১৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে। লিটন শহরের সবুজবাগ এলাকার ৯ নম্বর লেনের বাসিন্দা। স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের অনেকেই লিটনকে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী বলে দাবি করেছেন।
এ মামলার বাদী জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন। মামলায় জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। মামলায় নাসির উদ্দিন উল্লেখ করেন, শান্তি সমাবেশে যোগ দিতে কর্মীদের নিয়ে শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে পৌরসভার ঈদগাহ মাঠ এলাকা দিয়ে যাওয়ার পথে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতৃত্বে আসামিরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে জখম করেন। বর্তমানে তিনি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ মামলায় ছাত্রলীগের কর্মী লিটন কীভাবে আসামি হলেন—জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, তিনি গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এ অবস্থার মধ্যেই মামলা হয়েছে। হামলার সময় বেশ কয়েকজনকে তিনি চিনেছেন। তবে কাদেরকে মামলার আসামি করা হয়েছে, সেটা তিনি জানেন না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লিটন নিজেকে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী বলে দাবি করেন। মুঠোফোনে লিটন বলেন, তিনি জানেন না, কেন কীভাবে তিনি ওই মামলার আসামি হলেন। সংগঠনের সব কার্যক্রমে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে আসছেন। তবে তাঁকে আসামি করার বিষয়টি তিনি জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের অবহিত করেছেন।
জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি ভুলবশত হয়েছে। এটা ঠিক করা হচ্ছে।