সমাবেশ শেষে ‘হামলার আতঙ্ক’ নিয়ে ফিরছেন নেতা-কর্মীরা
‘ভয় করছে, যাওয়ার পথে আবার কোনো সমস্যা হয় কি না। বাড়ি ফেরার পর হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানি করার শঙ্কা তো রয়েছেই। তাই আতঙ্ক নিয়ে বাড়ি ফিরছি।’
খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিতে আজ শনিবার ভোরে যশোরের কেশবপুর থেকে এসেছিলেন রফিকুল ইসলাম। বিকেলে ফিরে যাওয়ার জন্য খুলনা নগরের পাওয়ার হাউস মোড়ে অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।
কীভাবে এসেছেন, জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পথে যেন কোনো বাধার সম্মুখীন হতে না হয়, সে জন্য রাত তিনটার দিকে ট্রাকে করে খুলনার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলাম। এর মধ্যে শুনতে পাই, চুকনগর ও ডুমুরিয়ায় আগের গাড়িগুলো থেকে নামিয়ে নেতা-কর্মীদের মারধর করছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পরে ওই পথ দিয়ে না এসে, ঘুরে বিভিন্ন ছোট পথ দিয়ে ভোরের দিকে খুলনায় এসে পৌঁছাই।’
এভাবে সমাবেশ শেষে ফিরে যেতে পথে বা বাড়িতে যাওয়ার পর হামলার মুখে পড়তে পারেন—এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী। সমাবেশের শেষের দিকে মঞ্চ থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ছোট ছোট দলে বাড়ি ফেরার আহ্বান জানান। পথে কোনো প্রকার মিছিল বা উসকানিমূলক বক্তব্য না দিতেও অনুরোধ করেন তাঁরা।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে আসার পথে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের যেভাবে মারধর করেছেন ও বাধা দিয়েছেন, তাতে সবাই আতঙ্কিত। এ জন্য দুপুরের পরপরই সমাবেশস্থল থেকে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছেন অনেকে। যাওয়ার পথে বিভিন্ন জায়গায় হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে কোথায় কতজন আহত ও হামলার শিকার হয়েছেন, সেগুলো পরে জানানো হবে।
গতকাল শুক্রবার রাত থেকেই খুলনার গণসমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা আসতে থাকেন। স্থানীয় বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, পথে খুলনা নগরের বিভিন্ন এলাকায় তাঁরা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের বাধার সম্মুখীন হন। বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে তাঁরা মারধর ও কুপিয়ে আহত করেন। ফিরে যাওয়ার পথে আবার মারধর করা হতে পারে বা বাড়ি ফেরার পর হামলা হতে পারে—এমন আশঙ্কা করছেন বিএনপির বেশির ভাগ নেতা-কর্মী।
নগরের দৌলতপুর এলাকা থেকে এসেছিলেন আমিনুল ইসলাম। প্রায় ১০০ জনের একটি দলের সঙ্গে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথে সমস্যা এড়াতে দল বেঁধে ফিরছেন জানিয়ে আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন রাস্তা, দৌলতপুর, খালিশপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় টহল বসিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। ওই পথ দিয়ে গেলেই মারধর শিকার হতে হয়েছে। এ জন্য রাতে ট্রলার নিয়ে খুলনার উদ্দেশে রওনা দিই। পথে চরেরহাট এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা একটি ট্রলারে করে এসে আমাদের কয়েকটি ট্রলারের নেতা-কর্মীদের মারধর করেন। আগে চলে এসেছি বলে বেঁচে গেছি। অন্য ট্রলারগুলো আবার ফেরত পাঠানো হয়।’