দুর্গাপূজা উদ্‌যাপন নিয়ে দুশ্চিন্তায় তুমব্রু সীমান্তের ১৮টি পরিবার

তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দুই মাস ধরে গোলাগুলি ও মর্টারের গোলা নিক্ষেপ চলছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সীমান্ত এলাকার চিত্র
ছবি: প্রথম আলো

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রুবাজারের ভেতরে একটি মন্দির রয়েছে। প্রতিবছর সেখানে প্রতিমা স্থাপন করে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপন করে স্থানীয় ১৮টি হিন্দু পরিবার। এবার সীমান্তের ওপারে চলা গোলাগুলির কারণে মন্দিরটিতে পূজার আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে আগামী ১ অক্টোবর থেকে। ৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জন। সীমান্ত উত্তেজনা বাড়তে থাকায় দুর্গাপূজার আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের উখিয়ার বালুখালী এলাকায় পূজার আয়োজনের জন্য বলা হচ্ছে। তবে তাঁরা সীমিত আকারে হলেও মন্দিরেই পূজার আয়োজন করতে চান। তুমব্রুবাজার মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫২ সালে।

আরও পড়ুন

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দুই মাস ধরে গোলাগুলি ও মর্টারের গোলা নিক্ষেপ চলছে। তুমব্রুবাজারের দক্ষিণে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির। কয়েক দিন আগে মন্দিরের পাশে কোনারপাড়ার শূন্যরেখার আশ্রয়শিবিরে মর্টারের গোলা এসে পড়লে একজন রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়।

আসন্ন দুর্গাপূজা আয়োজন নিয়ে করণীয় ঠিক করতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বৈঠকে বসেছিলেন তুমব্রুবাজার শ্রীশ্রী দুর্গামন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। বৈঠক চলাকালেও ওপার থেকে থেমে থেমে মর্টার শেলের গোলার বিকট শব্দ তাঁদের কানে বাজছিল।

আরও পড়ুন

বৈঠক শেষে মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি রূপলা ধর বলেন, দুই মাস ধরে গোলা–আতঙ্কে ভুগছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। সীমান্ত পরিস্থিতির কারণে প্রশাসনের পক্ষ এবার পার্শ্ববর্তী কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীতে গিয়ে দুর্গাপূজা করতে বলা হচ্ছে। তবে কমিটির সদস্যরা ১০–১২ কিলোমিটার দূরে বালুখালীতে গিয়ে পূজা করতে চান না। সীমিত আকারে হলেও তুমব্রু মন্দিরে পূজা আয়োজনের পক্ষে মতামত দেন।

রূপলা ধর বলেন, জীবনের নিরাপত্তা আগে। তাই শেষ মুহূর্তে প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত দেয়, সেটি তাঁদের বিবেচনায় নিতে হবে। তবে সীমিত পরিসরে হলেও তুমব্রু মন্দিরে পূজা সারতে চান সবাই।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, জীবনের নিরাপত্তা বিবেচনা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তুমব্রুবাজারের হিন্দুদের উখিয়ার বালুখালী এলাকায় গিয়ে দুর্গাপূজা সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে হিন্দুরা সিদ্ধান্ত জানানোর কথা। সম্ভবত এ জন্য আজ তাঁরা বৈঠকে বসেছেন। আশা করছি, তত দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে। তখন তুমব্রু মন্দিরেই তাঁরা পূজা করতে পারবেন।

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা ফেরদৌসের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি।

আরও পড়ুন