পিরোজপুরে নৌকার সমর্থকদের হামলায় নিহতের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৩

লালন ফকির
ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় লালন ফকির (২৭) নামে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক কর্মী নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাকসুদুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলায় সদর উপজেলার উত্তর রানীপুর গ্রামের বাবু শেখকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে প্রধান আসামি বাবু শেখসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন জাহিদ হাওলাদার ও মো. সবুজ।

আরও পড়ুন

মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, নিহত লালন ফকিরের পক্ষে তাঁর কোনো স্বজনকে বাদী হিসেবে পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছে। ইতিমধ্যে প্রধান আসামিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে সদর উপজেলার রানীপুর গ্রামের বটতলা এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিমের সমর্থক বাবু শেখের নেতৃত্বে একদল যুবক লালন ফকিরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। এতে তাঁর ডান পা, হাত ও বুকে গুরুতর জখম হয়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ওই রাতেই তাঁকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে তিনি মারা যান।

আরও পড়ুন

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আজ রাত আটটায় রানীপুর বালুর মাঠে লালন ফকিরের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হবে।

নিহত লালন ফকির পিরোজপুর পৌরসভার মধ্য ডুমুরিয়া মহল্লার আবদুল হান্নান ফকিরের ছেলে। তিনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তবে কয়েক বছর ধরে তিনি সদর উপজেলার শারিকতলা ডুমুরিতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আজমির হোসেন মাঝির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন। কয়েকটি স্থানীয় নির্বাচনে তিনি নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালের পক্ষে তিনি প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল রাতে এবং আজ সকালে পিরোজপুর শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

আরও পড়ুন

অন্যদিকে প্রধান আসামি বাবু শেখ নৌকার প্রার্থী শ ম রেজাউল করিমের কর্মী। তিনি সদর উপজেলার উত্তর রানীপুর গ্রামের আবদুর রশীদ শেখের ছেলে। দুই বছর আগে রাজধানীতে বিদেশি মদসহ র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর এলাকায় তিনি ‘মদ বাবু’ নামে পরিচিত।

প্রসঙ্গত, পিরোজপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন শ ম রেজাউল করিম। এ আসনে নৌকার মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল। তিনি নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।