হাতিয়ায় পুকুরে ঘুরে বেড়ানো কুমিরটি গেল কই

নোয়াখালীর হাতিয়ায় কুমিরের সন্ধানে পুকুরে জাল ফেলা হয়েছে। তবে সন্ধান মেলেনি কুমিরের। আজ দুপুরে তোলা। ছবি: সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম আরিফ-উজ-জামানের কাছ থেকে পাওয়া।

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ‘পুকুরে পুকুরে ঘুরে বেড়ানো কুমিরের’ সন্ধান পাননি বন বিভাগের কর্মকর্তারা। গ্রামবাসীর দেখা প্রাণীটি আদৌ কুমির ছিল কি না, সে বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তাঁরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই এলাকার একটি পুকুরে জাল দিয়ে কুমিরের সন্ধানে তল্লাশি চালান বন বিভাগের লোকজন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কুমিরের সন্ধান না পেয়ে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

অভিযানে থাকা নোয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম আরিফ-উজ-জামান প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে বন বিভাগের এই কর্মকর্তা ওই প্রাণীটির একটি স্থিরচিত্র পর্যবেক্ষণ করে প্রাথমিকভাবে সেটিকে রামগুই (গুইসাপ) বলে ধারণা করেছেন। প্রাণীটি অন্য কোথায়ও চলে গেছে বলে ধারণা তাদের।

সহকারী বন সংরক্ষক প্রথম আলোকে আরও বলেন, কুমির আরামপ্রিয় প্রাণী। এটি সাধারণত দুই-তিন দিন পর একস্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয়ে থাকে। তবে তাঁর জানা মতে, ভৌগোলিকভাবে এই এলাকায় কুমিরের অস্তিত্ব কখনোই ছিল না, তা ছাড়া এত বড় আকারের রামগুইও সচরাচর দেখা যায় না।

আরও পড়ুন

এর আগে হাতিয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মাসুদুল ইসলাম ওরফে শরীফের বাড়ির পুকুরে কুমিরসাদৃশ্য একটি প্রাণীকে দেখে বাড়ির বাসিন্দাসহ স্থানীয় লোকজন সেটিকে কুমির বলে ধারণা করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে বন বিভাগের স্থানীয় লোকজনও পুকুরে সেটিকে ভাসতে দেখে কুমির হতে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন।

লাকড়ি রাখার ঘরের টিনের চালে শুয়ে আছে প্রাণীটি। এটি দেখেই স্থানীয় লোকজন ভেবেছিলেন কুমির। তবে সেই সময় ধারন করা স্থিরচিত্র দেখে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন, প্রাণীটি কুমির নয় গুইসাপ
ছবি: সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম আরিফ-উজ-জামানের কাছ থেকে পাওয়া।

বাড়ির মালিক মাসুদুল ইসলাম ওরফে শরীফ গতকাল বুধবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন দিন আগে আমাদের বাড়ির উত্তর পাশের একটি বাড়ির লাকড়ি রাখার ঘরে প্রথম কুমিরটি দেখা যায়। আমরা লাঠিসোঁটা ও টেঁটা নিয়ে ধাওয়া করলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদের বাড়ির পুকুরে পড়ে। গতকাল সকালে আমাদের পুকুরে দেখা যায়। গতকাল বিকেল পর্যন্ত কুমিরটি পুকুরের চারপাশে পানিতে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়।’ তিনি জানান, কুমিরটির পিঠের দিক কিছুটা হলদে এবং খাঁজকাটা। লম্বায় চার থেকে পাঁচ হাত।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পুকুরে কুমিরে দেখা মেলার খবর পেয়ে তিনিও আজ সকালে সেখানে গিয়েছিলেন। তার আগে বন বিভাগের কর্মকর্তারাও সেখানে গেছেন। পরে পুকুরে জাল ফেলে কুমিরের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। একটি ছবি দেখে ধারণা করা হচ্ছে ওই প্রাণীটি রামগুই।

আরও পড়ুন