১২ ঘণ্টা পর খুলনার পথে ট্রেন, সাগরদাঁড়ির ফিরতি যাত্রা বাতিল

ট্রেন
প্রতীকী ছবি

দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা পর ঢাকা থেকে খুলনাগামী আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা থেকে খুলনার পথে আবার রেল চলাচল শুরু হয়েছে। শনিবার বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে ট্রেনটি খুলনার উদ্দেশে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন ত্যাগ করে।

অন্যদিকে সময়-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে খুলনা-রাজশাহী রেলপথে চলা আন্তনগর সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনের ফিরতি যাত্রা (খুলনা থেকে রাজশাহী) বাতিল করা হয়েছে।

আরও পড়ুন
শনিবার ভোর ৪টা ১৮ মিনিটের পর টানা প্রায় ১২ ঘণ্টা চুয়াডাঙ্গা থেকে খুলনার পথে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। অথচ শিডিউল অনুযায়ী এ সময়ে তিনটি আন্তনগর ও একটি মেইল ট্রেন খুলনার পথে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।
আরও পড়ুন

শনিবার সকাল থেকে খুলনাগামী সব ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার আগে মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটি, ইজিবাইকসহ সব অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে হঠাৎ শুক্রবার ও শনিবার দুই দিন ধর্মঘটের ডাক দেয় জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি। ধর্মঘটে একাত্মতা প্রকাশ করে খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। এরপর লঞ্চ চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে শুক্রবার থেকে কার্যত দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে খুলনা।

শনিবার খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ছিল। দলটির অভিযোগ, তাদের গণসমাবেশে মানুষের উপস্থিতি ঠেকাতে ‘ষড়যন্ত্র’ করে এ ধর্মঘট ও ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

এদিকে খুলনাগামী সব পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুর রহমান তাঁর একমাত্র মেয়েকে জরুরি প্রয়োজনে যশোরে পাঠাতে সকালে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে আসেন। সকাল ৯টা ১৯ মিনিটে সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি স্টেশনেই আসেনি। তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পরও ট্রেনের বিষয়ে রেলের কর্মকর্তারা কিছু বলতে না পারায় দুপুর সোয়া ১২টার দিকে হতাশ হয়ে তিনি বাড়িতে ফিরে যান।

আরও পড়ুন

চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনমাস্টারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট দেরিতে শনিবার ভোর ৪টা ১৮ মিনিটে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এরপর টানা প্রায় ১২ ঘণ্টা চুয়াডাঙ্গা থেকে খুলনার পথে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। অথচ শিডিউল অনুযায়ী এ সময়ে তিনটি আন্তনগর ও একটি মেইল ট্রেন খুলনার পথে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।

রেলস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে খুলনার উদ্দেশে চুয়াডাঙ্গা স্টেশন ত্যাগ করে। ট্রেনটি বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও দেরি হয় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট। এরপর সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ছয়টি ট্রেন খুলনার পথে ছেড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি দেরিতে যায় রাজশাহী থেকে আসা আন্তনগর সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেনটি প্রায় ৮ ঘণ্টা দেরিতে বিকেল ৫টা ১৩ মিনিটে ছেড়ে যায়। অন্য ট্রেনগুলোর মধ্যে মহানন্দা এক্সপ্রেস ৫ ঘণ্টা দেরিতে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে, রূপসা এক্সপ্রেস ৩ ঘণ্টা দেরিতে ৬টা ৪৮ মিনিটে ও কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ৩৫ মিনিট দেরিতে ৫টা ৩৮ মিনিটে ছেড়ে যায়।

আরও পড়ুন

চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ের স্টেশনমাস্টার মিজানুর রহমান সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, সময়-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে খুলনা থেকে রাজশাহীগামী (ঊর্ধ্বমুখী) আন্তনগর সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটির যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। ওই ট্রেনের খুলনা থেকে বিকেলে ছেড়ে আসার কথা ছিল। রাত ৯টা ১৫ মিনিটে চিলাহাটিগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ও রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি খুলনা থেকে আসার কথা আছে। বড় ধরনের সমস্যা না হলে ওই ট্রেন দুটি নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে আসবে এবং চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে পর্যায়ক্রমে রাত ১১টা ৫৬ ও ১২টা ৫৬ মিনিটে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।