‘মাইরের ওপর ওষুধ নাই’ বক্তব্য দেওয়া ছাত্রলীগ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

নরসিংদী-১ সদর আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উদ্দেশে ‘মাইরের ওপর ওষুধ নাই’ বলে বক্তব্য দেওয়া জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসানুল ইসলাম ওরফে রিমনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, জানতে চেয়েছে ওই আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সদস্য নরসিংদীর যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ নাহিদুর রহমান নাহিদ। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।

গত বুধবার দুপুরে নরসিংদী ক্লাবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের মতবিনিময় সভা হয়। সেখানে সদর আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পেটানোর হুমকি দেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম। ওই সভায় তাঁর দেওয়া এ বক্তব্য দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। এ নিয়ে প্রথম আলোর অনলাইনে ‘মাইরের ওপর ওষুধ নাই, পোলাপাইন জানে কীভাবে পিটাইতে হয়’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসানুল ইসলামের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি। অবশ্য বিতর্কিত ওই বক্তব্যের বিষয়ে এর আগে তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, দলীয় নেতা হয়েও যাঁরা নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন, তিনি মনে করেন, তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এ জন্য তিনি তাঁদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। নৌকাকে জেতাতে যা যা করার দরকার, তিনি তা-ই করবেন।

জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসানুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রবিউল আলম বলেন, এমন হুমকি-ধমকি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করে। নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের এমন ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, গত ২৯ নভেম্বর বুধবার দুপুরে নরসিংদী ক্লাবে অনুষ্ঠিত নরসিংদী-১–এর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের মতবিনিময় সভায় নির্ধারিত ভাষণে আহসানুল বলেছেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কোনো স্বতন্ত্র-মতন্ত্র চিনে না। মাইরের ওপর কোনো ওষুধ নাই। পোলাপাইনও জানে কীভাবে পিটাইতে হয়। কোনো স্বতন্ত্র-মতন্ত্র ছাত্রলীগ মানে না। স্বতন্ত্র প্রার্থীকে কীভাবে পিটাইতে হয় হে ওই আমগরে শিখাইছে, হেরে আমরা হেমনেই পিটাইমু। এই আসনের কোনো এলাকায় তাঁদের জায়গা দেওয়া যাবে না।’ এই বক্তব্য প্রথম আলোর পত্রিকার অনলাইনে প্রকাশিত হয়। এমন বক্তব্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার লঙ্ঘন। আইন ভঙ্গের কারণে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, নোটিশপ্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।