রূপগঞ্জে যুবদল নেতার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুট, বিএনপি নেতার বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক যুবদল নেতার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে উপজেলার কায়েতপাড়ায় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক দেওয়ান মো. জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আল-আমিনের নেতৃত্বে স্থানীয় যুবলীগ কর্মী মো. এসহাক, মো. নয়ন, কুরবান আলী ও বাবু প্রধান তাঁর মালিকানাধীন একটি ওয়ার্কশপে হামলা চালান। এ সময় তাঁরা একটি পিকআপ ভ্যানে করে কারখানায় থাকা প্রায় পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের মালামাল ও এক লাখ চার হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গেছেন। লুটপাটের প্রমাণ মুছে ফেলতে কারখানায় থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ডিভি বক্স খুলে নিয়ে গেছেন। লুটপাটে বাধা দেওয়ায় তাঁর দোকানের কর্মচারী রফিককে মারধর করে দোকানে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন জুয়েল।
বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় গোলাকান্দাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যুবদল নেতা জুয়েলের মালিকানাধীন ওয়ার্কশপটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ। কারখানার পাশে থাকা একটি দোকানের কর্মচারী (২১) নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘লোকজন পিকআপ নিয়া আইয়া ঝামেলা করেছে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আল-আমিনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে আজ বেলা তিনটায় কায়েতপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গুলজার হোসেনের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বাড়ির প্রধান ফটক, জানালার কাচ, আঙিনায় থাকা সিমেন্টের তৈরি বেশ কিছু ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়।
গুলজার হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল শুক্রবার কায়েতপাড়া ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে বৃহস্পতিবার স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে তাঁর বাড়িঘর ভাঙচুর করেছেন। হামলার নেতৃত্বে কে ছিলেন, জানতে চাইলে গুলজার বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে আহত নেতা-কর্মীদের দেখতে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজে এসেছিলাম। এ সময় হামলা হয়েছে। কারা নেতৃত্ব দিয়েছে, তা জানতে পারিনি।’
অভিযোগ বিষয়ে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহেদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ ওর (গুলজার) বাড়ির আশপাশে আমরা যাই নাই। ওরা যেন না বের হইতে পারে, সে জন্য কালকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অবস্থান নিমু।’
এদিকে সম্মেলনের আগে কাঞ্চন, গোলাকান্দাইল ও কায়েতপাড়ায় লাগাতার হামলার ঘটনায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা মহল্লায় মহল্লায় ঢুকে নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট চালাচ্ছে। কাল শুক্রবার উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের নিরাপত্তা নিয়ে তাঁরা শঙ্কিত।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম সায়েদ বলেন, এ ধরনের হামলা বা লুটপাটের কোনো অভিযোগ তাঁরা পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।