ভৈরবে দ্বন্দ্ব নিরসনে বৈঠক হয়নি, ষষ্ঠ দিনের মতো ওষুধ সরবরাহ বন্ধ

কিশোরগঞ্জ জেলার মানচিত্র

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ক্লিনিকমালিক ও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসনে সিভিল সার্জনের বেঁধে দেওয়া ২৪ ঘণ্টা সময় পার হলেও সমঝোতার বৈঠক হয়নি। ফলে আজ বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ দিনের মতো বিভিন্ন ক্লিনিকের ফার্মেসিতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ আছে।

আজ দুপুর ১২টায় জেলা সিভিল সার্জন মো. সাইফুল ইসলামের উপস্থিতিতে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সম্মেলনকক্ষে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব নিরসনে সমঝোতা বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল। বৈঠকে দুই পক্ষের প্রতিনিধিদের যথাসময়ে উপস্থিত থাকতে গতকাল বুধবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছিল, তবে আজ আকস্মিকভাবে বৈঠকটি স্থগিত হয়।

বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ভৈরব শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, সিভিল সার্জনের নির্দেশনা পেয়ে বৈঠকে উপস্থিত হতে সংগঠনের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে আজ সকাল থেকে জোটবদ্ধ হয়ে নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু তাঁরা জানতে পারেন সিভিল সার্জন নিজেই আসেননি।

তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, কেবল স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সমস্যা সমাধানে অনীহা দুই পক্ষেরই। উভয় পক্ষের চাওয়া ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নিজেদের পছন্দের কয়েকজন নেতা সমঝোতা বৈঠকে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। এই নিয়ে ভিন্ন মতের কারণে পূর্বঘোষিত সময়ে বৈঠকটি করা যায়নি।

আরও পড়ুন

ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভাষ্য, বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে ভৈরবে ক্লিনিকমালিকদের একটি সংগঠন আছে। আবার ৩৫টি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের অংশ গ্রহণে আছে ‘ফারিয়া’ নামে একটি সংগঠন। ক্লিনিকমালিকদের সংগঠনের একটি অনুষ্ঠানের জন্য ফারিয়া সদস্যদের কাছে এক লাখ টাকা চাওয়া হয়। কিন্তু ফারিয়ার সদস্যরা সেই টাকা দিতে না পারায় ক্লিনিকমালিকেরা ক্ষুব্ধ হন। কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাঁরা সাড়া পাননি। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পেশাগত দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।

এ ঘটনার জেরে গত ২৮ মার্চ ক্লিনিকমালিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে চারটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিকে ক্লিনিকে প্রবেশ, চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, ওষুধ কেনাবেচা ও লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে গত শনিবার থেকে বিভিন্ন ক্লিনিকের ফার্মেসিতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ক্লিনিকমালিকেরা বলছেন, ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাটানি করে রোগীদের হয়রানি করায় তাঁদের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানের জন্য টাকা চাওয়ার বিষয়টিও সত্য নয়।
ফারিয়া ভৈরব শাখার সভাপতি পায়েল মুন্সির দাবি, আজকের সমঝোতার বৈঠক না হওয়ার কারণ তাঁরা নন। রাজনৈতিক নেতাদের বাদ দিয়ে বৈঠকে বসলেও তাঁদের সমস্যা নেই। সমস্যা হলো ক্লিনিকমালিকদের আন্তরিকতার।

আরও পড়ুন