কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় খেতে কাজ করার সময় অপহৃত রোহিঙ্গা মোহাম্মদ ছৈয়দকে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পর ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা। তবে তাঁকে ছাড়ার পর টেকনাফের স্থানীয় এক বাসিন্দাকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকায় অপহৃত মোহাম্মদ ছৈয়দকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মোহাম্মদ আলী। পরে একই এলাকা থেকে রহমত উল্লাহ নামের স্থানীয় একজন কৃষককে অপহরণ করা হয়েছে বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
মোহাম্মদ ছৈয়দের স্ত্রী হাসিনা বেগমের বরাত দিয়ে ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, গত সোমবার বিকেলের দিকে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্ত হাসিনা বেগমের মুঠোফোনে কল দিয়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। নইলে মোহাম্মদ ছৈয়দকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। এতে গোপনে অপহরণকারীদের তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। মুক্তিপণ পেয়ে অপহরণকারীরা মোহাম্মদ ছৈয়দকে ছেড়ে দেয়।
নতুন করে একজনকে অপহরণের বিষয়ে ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, রহমত উল্লাহর পাহাড়ে খেত-খামার রয়েছে। খেতের দেখাশোনা করতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। অস্ত্রের মুখে রাতে তাঁকে অপহরণ করার খবর পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন মজুমদার বলেন, কয়েক দিন ধরে চলা র্যাব-পুলিশের টানা অভিযানের কারণে চাপের মুখে পড়ে অপহরণকারীরা মোহাম্মদ ছৈয়দকে ছেড়ে দিয়েছে। মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। তবে নতুন করে একজনকে অপহরণ করার বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে তিনি শুনেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত সোমবার সকাল ১০টার দিকে হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরা জুম্মাপাড়া পাহাড়ি এলাকায় অপহরণের শিকার হন রোহিঙ্গা মোহাম্মদ ছৈয়দ। খেতে কাজ করার সময় মুখোশ পরা একদল দুর্বৃত্ত অস্ত্রের মুখে তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তিনি বাংলাদেশে আসা পুরোনো রোহিঙ্গাদের একজন।
হ্নীলা ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, একদল দুর্বৃত্ত প্রায়ই টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। এ কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জোরালো অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ছয় মাসে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা থেকে প্রায় ৫০ জন ব্যক্তিকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৩২ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকি ১৮ জন রোহিঙ্গা। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন মুক্তিপণ আদায়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।