কঠোর নিরাপত্তায় রূপপুরে পৌঁছাল ইউরেনিয়ামের চতুর্থ চালান
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের চতুর্থ চালান পৌঁছেছে। বিশেষ নিরাপত্তাবলয়ের মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িবহর রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায়।
পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় চালানের মতো কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়ামবাহী গাড়িবহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত বিদেশি নাগরিকেরাসহ শ্রমিক-কর্মচারীরা গাড়িবহরকে স্বাগত জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে নাটোর-কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক দিয়ে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো রূপপুরে আসে। এ সময় মহাসড়কে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তাবলয় ছিল। নিরাপত্তার জন্য ভোর ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ১০ পর্যন্ত পাবনা-নাটোর-কুষ্টিয়া মহাসড়ক দিয়ে বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ইউরেনিয়াম পৌঁছানোর পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান রূপপুরে পৌঁছায়। ৫ অক্টোবর চালানটি প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ঐতিহাসিক এই কমিশনিংয়ের মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়াম জ্বালানির যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। এরপর ৬ অক্টোবর ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান এবং ১৩ অক্টোবর তৃতীয় চালান রূপপুরে পৌঁছায়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের পরিচালক শৌকত আকবর প্রথম আলোকে বলেন, প্রথম চালানের মতো রাশিয়া থেকে বিশেষ বিমানে ইউরেনিয়ামের চতুর্থ চালান ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এরপর রূপপুরে আনা হয়। পর্যায়ক্রমে এমন আরও তিনটি চালান দেশে আসবে।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একক প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। রাশিয়া থেকে ঋণসহায়তা হিসেবে আসছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের উৎপাদনের সক্ষমতা ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। প্রকল্পের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আগামী বছর প্রথম ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে চায়। একই বছর বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করার আশা করছে তারা।