হত্যার সময় খোয়া যাওয়া সেলিম খানের পিস্তল ৭০ দিন পর উদ্ধার
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আলোচিত চেয়ারম্যান সেলিম খানের খোয়া যাওয়া ৯ এমএম পিস্তলটি উদ্ধার করা হয়েছে। যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগরা বাজার এলাকার একটি বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে ঘটনার ৭০ দিন পর আজ মঙ্গলবার বিকেলে এটি উদ্ধার করে।
আজ রাতে চাঁদপুর মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানিয়েছেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুর রকিব পিপিএম। এ সময় যৌথ বাহিনীর নেতৃত্বদানকারী লে. কর্নেল মোয়াজ্জেম, চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) বলেন, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ জনতা সেলিম খান ও তাঁর ছেলে চিত্রনায়ক শান্ত খানকে অবরুদ্ধ করে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ সময় সেলিম খানের লাইসেন্স করা একটি পিস্তল ও একটি শটগান খোয়া যায়। ঘটনার ১০ দিন পর চাঁদপুর সদরের বাগাদী ইউনিয়নের এহসান মেম্বার নামের এক ব্যক্তি শটগানটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। কিন্তু তখন পিস্তলটির খোঁজ পাওয়া যায়নি।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহার মিয়া বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়, তা স্থগিত করে ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিজ নিজ জেলার থানায় জমা দিতে বলা হয়। এ ঘোষণার পর আজ পর্যন্ত শুধু সেলিম খানের পিস্তলটি পাওয়া যায়নি। তবে আমরা যৌথ বাহিনী এসব অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছি। অবশেষে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হই। এই সময় ছয়টি গুলিসহ একটি ম্যাগাজিনও উদ্ধার করা হয়।’
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় সেলিম খান তাঁর দুই ছেলে শান্ত খান ও শাহিন খানকে নিয়ে একটি প্রাইভেট কারে চাঁদপুর থেকে পালিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁরা চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে পৌঁছালে বিক্ষুব্ধ জনতার সামনে পড়েন। সেলিম খান ও তাঁর ছেলেরা কোনোরকমে সেখান থেকে পালিয়ে আসতে পারলেও পাশের বাগরা বাজারে উত্তেজিত জনতা তাঁদের গাড়ির গতি রোধ করেন। সেখানেই বিক্ষুব্ধ জনতার পিটুনিতে সেলিম খান ও তাঁর ছেলে শান্ত খান নিহত হন। তবে ছোট ছেলে শাহিন খান কোনোরকমে প্রাণে বেঁচে আসেন। পরে স্থানীয় লোকজন সেলিম খান ও তাঁর বড় ছেলে শান্ত খানের লাশ উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। কিন্তু তখন পুলিশের কার্যক্রম না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই ওই রাতেই তাঁদের লাশ দাফন করা হয়।