শরীয়তপুর জেলা শহরের শিশুকানন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র হৃদয় খান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কারাগারে থাকা তিন আসামির বসতবাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার খিলগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের অভিযোগ, হৃদয় খানের স্বজনেরা এ ভাঙচুর চালান। তবে হৃদয়ের বাবা মনির হোসেন খান বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
পালং মডেল থানার পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের খিলগাঁও এলাকার মালয়েশিয়াপ্রবাসী মনির হোসেন খানের ছেলে হৃদয় খানকে গত ৩১ জুলাই অপহরণ করা হয়। এরপর তাকে হত্যা করে মাটি চাপা দেয় দুর্বৃত্তরা। তারপর তার মায়ের মুঠোফোনে কল করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে চারজনকে আটক করে। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১ আগস্ট ভোরে খিলগাঁও এলাকার একটি ইটভাটার পাশের একটি নির্জন স্থান থেকে হৃদয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনায় করা মামলায় সিয়াম (২০), শাকিল গাজি (১৮), শাওন চৌকিদার (২০) ও ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর কারাগারে আছেন। তাঁরা হৃদয়কে হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শাকিল, শাওন ও আরেক কিশোর আসামির বাড়ি খিলগাঁও গ্রামে। আর সিয়ামের বাড়ি পাবনা জেলার একটি গ্রামে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, আজ ওই মামলার শুনানি ছিল শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। শুনানি চলাকালে শিশুর স্বজনেরা আদালত চত্বরে উপস্থিত হন। হৃদয়ের বাবা মনির হোসেন খান সম্প্রতি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে আসেন। তিনিও সোমবার আদালত চত্বরে যান। দুপুরে গ্রামে ফিরে তাঁরা তিন আসামির বাড়িতে ভাঙচুর চালান।
ভুক্তভোগী সুফিয়া বেগম বলেন, ‘আমি দুপুরে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ মনির হোসেন খানসহ ১৫ থেকে ২০ জন লোক আমাদের ঘরে ঢুকে সব জিনিসপত্র ভাঙচুর চালাতে থাকে। আমার দেবর শাকিল যদি হত্যায় জড়িত থাকে, তাহলে ওর ফাঁসি হোক, আর নির্দোষ হলে মুক্তি পাক। এটা আদালতে প্রমাণ হবে। তাই বলে আমাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালাবে কেন?’
আরেক আসামির বোন বলেন, তাঁর ভাই অন্যায় করেছেন। তাই অন্যায়কারী হিসেবে ওর শাস্তি তাঁরাও চান। কিন্তু পরিবারের অন্যরা তো অপরাধ করেননি। তাহলে তাঁদের এই ক্ষতি করল কেন?
ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মনির হোসেন খান। তিনি বলেন, ‘আমি আমার কলিজার টুকরা, আমার মানিকরে হারাইছি। আমার স্ত্রী এখন পাগলপ্রায়। কারও বাড়িঘরে কোনো ভাঙচুর চালাইনি। তারা নিজেরাই ভেঙে ফেলে মিথ্যা দোষ দিচ্ছে।’
শরীয়তপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার হোসেন বলেন, ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছেন। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।