মুকসুদপুরে নৌকা ও ঈগলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২০

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার শুয়াশুর গ্রামে ঈগল সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে
ছবি: সংগৃহীত

গোপালগঞ্জ-১ (মুকসুদপুর-কাশিয়ানীর একাংশ) আসনের ঈগল ও নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে মুকসুদপুর উপজেলার মোচনা ইউনিয়নের শুয়াশুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে নারীসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ৩টি দোকান ও ৮টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলায় আহত কাদের শেখ (৪৫) নামের এক কর্মীকে প্রথমে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে পরে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি ঈগলের সমর্থক।

আরও পড়ুন

এ ঘটনায় লাকিয়া বেগম নামের ঈগলের এক কর্মী মুকসুদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। নৌকার কর্মীরা এই হামলা করেছেন বলে ঈগল শিবির থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই নৌকার কর্মী ও মোচনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান চেয়ারম্যান মো. ইমদাদ মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে মুকসুদপুর থানা-পুলিশ।

এই আসনের নৌকার প্রার্থী টানা পাঁচবার সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান। ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সদ্য পদত্যাগ করা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কাবির মিয়া। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য।

আরও পড়ুন
ঈগল সমর্থকদের বাড়িঘরে ঢুকেও হামলা করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে মুকসুদপুর উপজেলার শুয়াশুর গ্রামে
ছবি: সংগৃহীত

লিখিত অভিযোগ, স্থানীয় লোকজন ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নৌকার কর্মী ইউপি চেয়ারম্যান ইমদাদ মোল্লা, তাঁর দুই ভাই মনির মোল্লা ও এনামুল মোল্লার নেতৃত্বে সকালে শুয়াশুর গ্রামে ঈগলের সমর্থকদের ওপর হামলা করা হয়। এমন সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারীসহ ২০ জন আহত হন। এ সময় ঈগল সমর্থকদের তিনটি দোকান ও আটটি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ঈগলের সমর্থকেরা।

গুরুতর আহত অবস্থায় রুবেল শেখ (৩৫), ফিরোজ শেখ (৬৫), বিপ্লব শেখ (৩০), শামিম শেখ (৩৫), রসুল শেখ (৩০), তানিয়া আক্তার (২২), কাদু শেখসহ (৫০) অন্তত ১৫ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, নৌকা ও ঈগলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোচনা ইউপির চেয়ারম্যান মো. ইমদাদ মোল্লাকে থানায় আনা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে বুধবার মোচনা ইউনিয়নের নওহাটা বাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সভা চলাকালীন ঈগলের তিনজন সমর্থককে মারপিট করেন নৌকার সমর্থকেরা। ওই সময় নুর আলম নামের একজনকে হাতুড়িপেটা করারও অভিযোগ ওঠে।

এ আসনে অন্য প্রার্থীরা হলেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শেখ মো. আবদুল্লাহ (আম), জাতীয় পার্টির মো. সহিদুল ইসলাম (লাঙ্গল) এবং তৃণমূল বিএনপির মো. জাহিদুল ইসলাম (সোনালী আঁশ)।

আরও পড়ুন