সুন্দরগঞ্জে বোতলসদৃশ বস্তুর বিস্ফোরণে আহত চারজন রংপুরে চিকিৎসাধীন

গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বিস্ফোরণে বাঁ হাতের কবজি উড়ে যাওয়া ফারুক মিয়া রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ রোববার সকালে
ছবি: মঈনুল ইসলাম

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বোতলসদৃশ বস্তুর বিস্ফোরণে একই পরিবারের আহত চারজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাঁদের সবার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের জিগাবাড়ির চর এলাকায় বিস্ফোরণে আহত হন তাঁরা।
আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার জিগাবাড়ি গ্রামের আবদুল হাকিম (৩৯), তাঁর স্ত্রী পারুল বেগম (৩৩), তাঁদের বড় ছেলে ফারুক মিয়া (২০) ও ছোট ছেলে রিপন মিয়া (১৭)।

তাঁদের মধ্যে বড় ছেলে সুন্দরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ফারুক মিয়া রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোসার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। তাঁর বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ডান পা, হাত ও বুকে আঘাত পেয়েছেন তিনি।

অর্থোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোস্তাফিজার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হলেও ফারুক মিয়া আশঙ্কামুক্ত। তাঁর হাতের অস্ত্রোপচার করা হবে।

আরও পড়ুন

আরেক ছেলে রিপন মিয়া চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় হাসপাতালের চক্ষু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তার ডান চোখে আঘাত লাগায় চোখ ব্যান্ডেজ করে রাখা হয়েছে। তার পা ও বুকেও আঘাত আছে। এই ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক সংগীতা বণিক বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর পুরো বিষয়টি বলা যাবে। তবে সে আশঙ্কামুক্ত।

আবদুল হাকিম পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাঁর দুই পায়ে আঘাত থাকলেও আপাতত ভালো আছেন বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। একই সঙ্গে পারুল বেগম মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাঁর পায়েও আঘাত আছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ইউনুছ আলী বলেন, আহত ব্যক্তিদের সার্বক্ষণিক নজরে রাখা হয়েছে। চিকিৎসাসেবা চলছে। তবে সবাই আশঙ্কামুক্ত।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজমিরুজ্জামান বলেন, আহত চারজন ওই কুড়িয়ে পাওয়া বস্তুটি খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে ওই বস্তুতে দা দিয়ে আঘাত করলে তা বিস্ফোরিত হয়। পুরো বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ ও আহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা বলেন, গতকাল শনিবার সকালে আবদুল হাকিম তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে তিস্তা নদীসংলগ্ন জমিতে জমে থাকা কচুরিপানা সরাতে যান। এ সময় কচুরিপানার নিচে পরিত্যক্ত অবস্থায় বোতলসদৃশ বস্তু পান। এটি কালো টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। আবদুল হাকিম বস্তুটিকে গুপ্তধন ভেবে বাড়িতে নিয়ে যান এবং বিষয়টি গোপন রাখেন। বিকেলে নিজ বাড়ির উঠানে স্ত্রী ও ছেলেদের নিয়ে বস্তুটি খোলার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে দা দিয়ে ওই বস্তুতে আঘাত করলে এটি বিস্ফোরিত হয়।