কলেজশিক্ষক খায়রুন নাহারের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামী কারাগারে

আদালত
প্রতীকী ছবি

নাটোরে কলেজশিক্ষক খায়রুন নাহারের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার তাঁর স্বামী মামুন হোসেনকে (২২) কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দীন এ আদেশ দেন।

গতকাল রোববার সকালে নাটোর শহরের বলারিপাড়া মহল্লার হাজি নান্নু ম্যানসনের চারতলার ভাড়া বাসা থেকে কলেজশিক্ষক খায়রুন নাহারের (৪২) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় তাঁর স্বামী মামুন হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সদর থানায় নেওয়া হয়। এরপর নিহত খায়রুন নাহারের চাচাতো ভাই ছবের উদ্দিন বাদী হয়ে গতকাল রাতে সদর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। মামলায় কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি।

আরও পড়ুন

নাটোর সদর থানা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, মামুন হোসেনকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দীনের এজলাসে হাজির করা হয়। এ সময় আইনজীবী গোলাম সারোয়ার তাঁর জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করেন এবং মামুনকে নাটোর কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সন্ধ্যায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

নাটোর সদর থানার জিআরও খাদেমুল ইসলাম আসামি মামুন হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে রোববার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে খায়রুন নাহারের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাত আটটার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলার খামার নাচকৈড়ের আবু বকর সিদ্দিকী কওমি মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে তাঁর লাশ নাচকৈড় কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নাটোর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা (আরএমও) সামিউল ইসলাম জানান, খায়রুন নাহার আত্মহত্যা করেছেন বলে ময়নাতদন্তে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য লাশের কিছু নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সেখানকার চূড়ান্ত প্রতিবেদন তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হবে।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষক খায়রুন নাহারের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তাঁর স্বামীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

খায়রুন নাহার নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর ডিগ্রি কলেজে দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার মো. খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। তাঁর স্বামী মামুন হোসেন একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর এক ছেলেকে নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন খায়রুন নাহার। একপর্যায়ে মামুন হোসেনের সঙ্গে প্রেম হয় তাঁর। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন তাঁরা।