শরীয়তপুরে হাতুড়ি পিটুনিতে এক সাংবাদিক আহত, অপরজনকে মারধর
শরীয়তপুরে হাতুড়ি পিটুনিতে এক সাংবাদিক আহত হয়েছেন। হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর সময় তাঁকে রক্ষা করতে এলে অপর সাংবাদিককে মারধর করা হয়। আজ সোমবার দুপুরে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পাশের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই দুই সাংবাদিক অভিযোগ করেছেন, দৈনিক জনতা পত্রিকার শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি নুরুজ্জামাল শেখ ও তাঁর লোকজন এই হামলা করেছেন।
পিটুনিতে আহত সাংবাদিকের নাম সোহাগ খান সুজন। তিনি দৈনিক সমকালের শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি। মারধরের শিকার অপর সাংবাদিকের নাম বিধান মজুমদার। তিনি বেসরকারি টিভি নিউজ টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি।
হামলার শিকার দুই সাংবাদিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক নুরুজ্জামাল শেখ শরীয়তপুর জেলা শহরের চৌরঙ্গী এলাকায় একটি ক্লিনিকের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে এক রোগীর প্যাথলজি পরীক্ষা ও মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে কয়েকটি পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ করা হয়, যা নিয়ে নুরুজ্জামাল শেখের সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের বিরোধ তৈরি হয়। গতকাল রোববার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে এ নিয়ে একটি সালিস হয়। ওই সালিসের পর কয়েকজন সাংবাদিক নুরুজ্জামালকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ঘটনার জেরে আজ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পাশের সড়কে নুরুজ্জামাল ও তাঁর লোকজন সমকালের জেলা প্রতিনিধি সোহাগ খানকে হাতুড়ি দিয়ে পেটান।
এ ঘটনার ১ মিনিট ৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নুরুজ্জামাল শেখ ও তাঁর লোকজন সাংবাদিক সোহাগ খানকে হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন। কয়েকজন তাঁকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। সাংবাদিক বিধান মজুমদার এগিয়ে এলে তাঁকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে নুরুজ্জামাল ও তাঁর লোকজনকে ধাওয়া দেন। পরে স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় সোহাগ খানকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠান।
সাংবাদিক সোহাগ খান বলেন, ‘নুরুজ্জামাল শেখের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। এক চিকিৎসককে নিয়ে নিউজ করার সূত্র ধরে নুরুজ্জামাল নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে গতকাল তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আজ আমার ওপর হামলা করেছেন। হাতুড়ি দিয়ে আমার সারা শরীরে আঘাত করেছেন। ঘটনাটি আমি লিখিতভাবে পুলিশকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুজ্জামাল শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কয়েকজন সাংবাদিক নিউজ করেছেন। তা নিয়ে ওই সাংবাদিকেরা আমাকে ভুল বুঝেছেন। ওই ঘটনার জেরে গতকাল সুজনের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জনে মিলে আমাকে মারধর করেছেন। আজ আবার আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। এরপর ওই মারামারির ঘটনা ঘটেছে। তাতে আমার লোকজনও আহত হয়েছেন।’
শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনাটি শুনে তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তবে এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। মামলা হওয়ার পর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।