তৃতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীদের অবস্থান, শিক্ষক রায়হানের রিমান্ডের আবেদন

শিক্ষার্থীকে গুলি করার অভিযোগে শিক্ষক রায়হান শরীফের শাস্তি চেয়ে বিক্ষোভ করেন অন্য শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের সামনের সড়কেছবি: সোয়েল রানা

সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে তৃতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। পিস্তলকাণ্ডে অভিযুক্ত মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রায়হান শরীফের চিকিৎসক সনদ বাতিল এবং চাকরিচ্যুত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গত দুই দিনের মতো আজ বুধবার সকাল থেকে তাঁরা ক্লাসে যাচ্ছেন না।

অন্যদিকে অস্ত্র মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রায়হান শরীফকে সাত দিনের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। আজ সকালে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিল্লাল হোসেনের আদালতে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক মোহাম্মদ ইব্রাহীম।

ডিবির আরেক পরিদর্শক জুলহাজ উদ্দীন বলেন, আজ দুপুরে আদালতে রিমান্ডের শুনানি হতে পারে। এর আগে গতকাল শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলায় একই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন শিক্ষক রায়হান শরীফ।

আরও পড়ুন

শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বল জানা গেছে, সোমবার বিকেলে মেডিকেল কলেজে মৌখিক পরীক্ষাকক্ষে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিনকে গুলি করেন শিক্ষক রায়হান শরীফ। পরে শিক্ষার্থীরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রায়হানের হেফাজত থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ৮১টি গুলি, ৪টি ম্যাগাজিন ও ১২টি বিদেশি চাকু উদ্ধার করে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীর বাবা এবং পুলিশ বাদী হয়ে রায়হানের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় আলাদাভাবে হত্যাচেষ্টা ও অস্ত্র মামলা করেন। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের ওই মামলায় রায়হানের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে আজ।

এদিকে আজ তৃতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি, শিক্ষক রায়হান শরীফকে চাকরিচ্যুত করতে হবে, তাঁর বিসিএস ক্যাডার স্বীকৃতি ও বিএমডিসি চিকিৎসক নিবন্ধন বাতিল করতে হবে এবং তাঁকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা না নিলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন

এর আগে গতকাল স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত দল মেডিকেল কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে। তদন্তকারী দলের কাছে শিক্ষার্থীকে গুলি করার কথা শিক্ষক রায়হান শরীফ স্বীকার করেছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষক রায়হান শরীফকে বিধি অনুসরণ করে চাকরিচ্যুতির উদ্যোগ নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরানোর চেষ্টা চলছে বলে জানান অধ্যক্ষ।