ঢাকায় রেলপথ অবরোধ, ভৈরবে টিকিট ফেরত দেওয়ার হিড়িক যাত্রীদের

ঢাকায় রেলপথ অবরোধের কারণে অধিকাংশ ট্রেনের যাত্রা বিলম্বের কথা জেনে ট্রেনের টিকিট ফেরত দিচ্ছেন যাত্রীরা। রোববার দুপুরে ভৈরব রেলস্টেশনে
ছবি: প্রথম আলো

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে রেলওয়ে শ্রমিকদের রেলপথ অবরোধ করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব স্টেশনের কয়েক শ যাত্রী। দুপুরে অবরোধ উঠে গেলেও প্রতিটি ট্রেনের বিলম্বের কথা জেনে বেশির ভাগ যাত্রীকে নিজেদের যাত্রা বাতিল করে টিকিট ফেরত দিতে দেখা গেছে। অনেকে দীর্ঘ বিলম্বের কথা জেনেও স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসে অলস সময় পার করছেন।

ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের আগানগর গ্রামের বাসিন্দা মারুফ সিদ্দিকী। কিশোরগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশে তিনি ‘কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেনের টিকিট কেটে ছিলেন। বেলা একটায় ট্রেনটির ভৈরব স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেওয়ার নির্ধারিত সময়। বেলা তিনটা বেজে গেলেও ট্রেনটি কমলাপুর থেকে না ছাড়ায় তিনি শেষে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট ফেরত দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

মারুফ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় পর টিকিট কাটি। আবার লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে টিকিট ফেরত দিতে হয়েছে। অনেক কষ্ট হলো।’  

ভৈরব রেলস্টেশন সূত্র জানায়, ভৈরব জংশন স্টেশনে বিভিন্ন পথে ১৮টি আন্তনগর ট্রেন যাতায়াত করে। দেশের কোথাও রেলপথে সমস্যা হলে ভৈরব স্টেশনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আজ তেজগাঁওয়ে অবরোধের ঘটনায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী ‘চট্টলা এক্সপ্রেস’, কিশোরগঞ্জগামী ‘কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস’, ব্রাহ্মণবাড়িয়াগামী ‘তিতাস কমিউটার’, নোয়াখালীগামী আন্তনগর ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ও সিলেটগামী ‘কালনী এক্সপ্রেস’ ট্রেনের যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। ট্রেনগুলোর কোনোটির নির্ধারিত সময়ে ভৈরব স্টেশনে আসার সুযোগ নেই। প্রতিটি ট্রেনের গড়ে তিন ঘণ্টা দেরি হবে। এ জন্য এসব ট্রেনের যাত্রীদের অধিকাংশই টিকিট ফেরত দিয়ে দেন। একসঙ্গে অনেকে ফেরত দেওয়ায় সারিবদ্ধভাবে তাঁদের টিকিট ফেরত নেওয়া হয়।

ট্রেন বিলম্বের কথা জেনেও অনেকে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। রোববার দুপুরে ভৈরব রেলস্টেশনে
ছবি: প্রথম আলো

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভৈরব রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে দীর্ঘ সারি। বিভিন্ন ট্রেনের যাত্রীরা টিকিট ফেরত দিচ্ছেন। তবে ১ ও ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে কিছু যাত্রী নির্ধারিত ট্রেনে যাওয়ার জন্য অলস সময় পার করছেন।

চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনে চট্টগ্রামে যেতে রেলস্টেশনে এসে নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ট্রেনের দেখা পাননি ভৈরব বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সবুর হোসেন। কখন আসবে, তা-ও নিশ্চিত নন। শেষে টিকিট ফেরত দিয়ে বাড়ি চলে যান তিনি। সবুর হোসেন বলেন, ‘রাতের মধ্যে চট্টগ্রামে পৌঁছানো খুবই প্রয়োজন ছিল। যেতে পারলাম না। অনেক সমস্যা হয়ে গেল।’

আরও পড়ুন

সাবরিনা বেগম নামের এক শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁকে আজ রাতের মধ্যে চট্টগ্রামে যেতেই হবে। সেই কারণে তিনি টিকিট ফেরত দেননি। মেঝেতে বসে দীর্ঘ অপেক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন।

ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, তেজগাঁওয়ের ঘটনায় ভৈরব স্টেশনে অসংখ্য যাত্রী ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকে টিকিট ফেরত দিচ্ছেন। তাঁরা সহজে টিকিট ফেরত নিয়ে নিচ্ছেন। কারণ, বেশির ভাগ ট্রেনের যাত্রা বিলম্ব হবে।