এক আঙুলে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সেই নিপা পাস করেছে
এক আঙুল দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া নিপা আক্তার (১৩) পাস করেছে। তার পাস করার খবরে পরিবারের সদস্য, সহপাঠী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আনন্দিত। সব ধরনের প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা নিপার। ভবিষ্যতে সে শিক্ষক হয়ে অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে চায়।
নিপা আক্তারের বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার চর কাশাভোগ গ্রামে। তিনি বিল্লাল হোসেন মোল্লা ও নাছিমা বেগম দম্পতির মেয়ে। আংগারীয়া উচ্চবিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল সে। জিপিএ-৩.৭২ পেয়ে সে পাস করেছে। ‘এক আঙুল দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে নিপা’ শিরোনামে গত ২১ মে প্রথম আলোতে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
নিপার পরিবার জানায়, ২০০৭ সালে নিপার জন্ম হয়। জন্মের সময় নিপার বাঁ হাত কবজি পর্যন্ত হয়। আর ডান হাতে একটি আঙুল হয়। ছোটবেলা থেকেই সে একটি আঙুল দিয়ে নিজের কাজকর্ম করে। তাকে ৭ নম্বর চরচটাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হলে সে এক আঙুল দিয়ে লেখার পদ্ধতি রপ্ত করে। পঞ্চম শ্রেণি পাস করার পর তাকে আংগারীয়া উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। ওই বিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল সে।
নিপার বাবা বিল্লাল হোসেন স্থানীয় আংগারীয়া বাজারে একটি মুদিদোকানে শ্রমিকের কাজ করেন। নিপারা তিন বোন ও দুই ভাই। নিপার বাবা বলেন, ‘আমার অভাবের সংসার। অনেক কষ্ট হয় সংসার চালাতে। তারপরও মেয়ের পড়ালেখা চালিয়ে নিচ্ছি। ওকে আমরা উচ্চশিক্ষিত করে তুলব। ও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারলে আর কেউ ওকে অবহেলা করতে পারবে না।’
নিপা আক্তার প্রথম আলোকে বলে, ‘আমি এমন ফলাফল করতে পেরে খুশি। পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চাই।’
আংগারিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রণজিৎ কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, নিপা একটি আঙুল দিয়ে লিখে এসএসসি পাস করেছে। সবাই ওকে নিয়ে গর্বিত, আনন্দিত। ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে সফল হওয়া যায়, নিপা তার প্রমাণ।
ভবিষ্যতে নিপা যাতে পড়ালেখা চালিয়ে নিতে পারে, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র।